Skill Jobs Forum

Career Counseling, Self Development, Skill Enhancer => Career Planning - Career Mapping,- Career Path Findings => Career Planning => Topic started by: jihad on December 05, 2013, 03:48:59 PM

Title: Fashion Manufacturer
Post by: jihad on December 05, 2013, 03:48:59 PM
ফ্যাশনের কারিগর

(http://www.ittefaq.com.bd/admin/news_images/2013/03/28/thumbnails/image_29313.jpg)

আমাদের দেশে রেডিমেট গার্মেন্টসের প্রচলন খুব বেশি দিনের কথা নয়। একটা সময় পর্যন্ত মানুষ গজ কাপড় কিনে দর্জির দোকানে দিয়ে নিজের মাপ অনুযায়ী কাপড় বানাত। সময়ের সাথে সাথে সেই চিত্রটি বদলে গেছে। এখন যেদিকেই তাকাবেন, সেদিকেই চোখে পড়বে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজ। আর এই ফ্যাশন হাউজগুলো আপনার পোশাকসংক্রান্ত চিন্তা-ভাবনাকে অনেকটাই পাল্টে দিয়েছে। কারণ, এসব ফ্যাশন হাউজের মাধ্যমে আপনি পাচ্ছেন পছন্দনীয় ও রুচিশীল রেডিমেড সব পোশাক। আর এটি সম্ভব হচ্ছে যাদের কল্যাণে, তারাই হলেন হালফ্যাশনের কারিগর?ফ্যাশন ডিজাইনার।

ফ্যাশন ডিজাইনার :সময়ের চাহিদাকে মাথায় রেখে বিভিন্ন শ্রেণির ক্রেতাগোষ্ঠীর সাধ এবং সাধ্যকে সমন্বয় করে ডিজাইন ও রঙের অপূর্ব সমন্বয়ে যারা আপনার পছন্দের পোশাকটি ডিজাইন করে থাকেন, তারাই ফ্যাশন ডিজাইনার। ইন্টারনেটের এই যুগে সারা পৃথিবীই এখন একটি বিশ্বগ্রামে পরিণত হয়েছে। তাই বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির সাথে নিজেদের সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটিয়ে পোশাকেও পরিবর্তন নিয়ে আসার কাজটি করে থাকেন এই ফ্যাশন ডিজাইনাররা। বদলে যাওয়া সময়ে বদলে যাওয়া মানুষের রুচির পাঠটিও নিয়ে পোশাক ডিজাইন করে থাকেন এই ফ্যাশন ডিজাইনাররা।

ক্যারিয়ার হিসেবে ফ্যাশন ডিজাইনার :বড় হয়ে কী ধরনের ক্যারিয়ার গড়ে তুলবে, এ ধরনের প্রশ্নে ছোটবেলায় সাধারণতই উত্তর আসে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা পাইলট। তবে বড় হওয়ার সাথে সাথে বাস্তবতার মুখোমুখি হতেই সেই চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসতে থাকে। অবশ্য আমাদের মতো আর্থ-সামাজিক অবস্থায় এখনও অভিভাবকদের মধ্যে ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা অনেক বেশি। এসব বিষয়ে পড়ালেখা করে কর্মজীবনে একটু বেশি সুবিধা পাওয়া যায় বলেই এসব বিষয়ে একটু পক্ষপাতিত্ব থেকেই যায়। তবে এসব বিষয়ে পড়ালেখার সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। যে কারণে অনেকেই ইচ্ছা থাকলেও ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুযোগ পায় না। এসএসসি কিংবা এইচএসসি পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল করলেও দেখা যায় ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার পড়ার সুযোগটিই মেলে না। কাজেই প্রয়োজন পড়ে ভালো ক্যারিয়ার গড়ার বিকল্প বিষয়ের। সময়ের সাথে সাথে এই বিকল্প হয়ে উঠতে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিচ্ছে ফ্যাশন ডিজাইন। ভালো একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হয়ে উঠতে পারাটাই এখন ভালো ক্যারিয়ার গড়ে ওঠার অন্যতম একটি প্রধান মাধ্যম হিসেবে গণ্য করছেন অনেকেই।

পড়ালেখার সুযোগ :একটা সময় পর্যন্ত ফ্যাশন ডিজাইনে পড়ালেখার সুযোগ ছিল অত্যন্ত সীমিত। মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাবটা ছিল প্রকট। তবে সময়ের সাথে সাথে এই বিষয়ে যেমন মানুষের আগ্রহ বেড়েছে, তেমনি এই বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠতে শুরু করেছে। আর এই বিষয়ে মানসম্মত শিক্ষা দিয়ে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতেই বছরখানেক আগে গড়ে উঠেছে বিজিএমইএ ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটি সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর মতোই বৈচিত্র্যময় ডিজাইনে সাজানো হয়েছে। গতানুগতিক চেয়ার-টেবিলে ঠেসে তৈরি হয়নি এখানকার ক্লাসরুম। একেকটা ক্লাসরুমের গড়ন একেক রকম। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে শিক্ষার্থীদের বই পড়ার পাশাপাশি হাতে-কলমে কাজ শেখার ওপর জোর দেওয়া হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি, নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচার অ্যান্ড টেকনোলজি, অ্যাপারেল ম্যানুফ্যাকচার অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগসহ মোট ১১টি বিভাগ রয়েছে। ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীদের কলতানে মুখর হয়ে উঠেছে এই ক্যাম্পাস।

শিক্ষার্থীদের কথা :কথা হলো কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। নিজেদের পড়াশোনা ও কাজের ব্যাপারে ভীষণ উচ্ছ্বসিত তারা। ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি বিষয়ের শিক্ষার্থী তামান্না হায়দার বললেন, 'ছোটবেলা থেকে ছবি আঁকতাম। মা-বাবার ইচ্ছা ছিল ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হব। কিন্তু আমি নিজের শখটা পূরণ করতে চেয়েছি। তাই এখানে পড়তে আসা।' নিজের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসা আরেক তরুণ সাইফুল ইসলাম বললেন, 'বর্তমান চাকরির বাজারে বস্ত্রশিল্প খাতে কাজের প্রচুর সুযোগ আছে। অনেক ক্ষেত্রেই যোগ্য ব্যক্তির অভাবে বিদেশিদের নিয়োগ দেওয়া হয়। তাই যোগ্যতা তৈরি করতে পারলে কাজের অভাব হবে না।' তাদের সাথে কথা বলে জানা গেল, বিশ্ববিদ্যালয়টি শীঘ্রই আয়োজন করতে যাচ্ছে জাতীয় পর্যায়ের ফ্যাশন ডিজাইন কনটেস্ট। এই কনটেন্ট নিয়ে দেখা গেল সকলেই উত্তেজিত। বাংলাদেশে এ ধরনের আয়োজন এই প্রথম।

সুবিধাদি এবং খরচ :বিজিএমইএ ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের সুবিধা। তাত্ত্বিক বিষয়ে পড়ালেখার জন্য রয়েছে সুবিশাল লাইব্রেরি। আর ব্যবহারিক কাজের জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রসমৃদ্ধ ল্যাবও রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানান, 'দেশের পোশাকশিল্পের ব্যাপক প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর তত্ত্বাবধানে বিজিএমইএ ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। গত বছরের মার্চে একে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়। এখানে রয়েছে ২২টি ল্যাবরেটরি।' বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভর্তি পরীক্ষায় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পাশাপাশি ড্রয়িং, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞানের ওপর জোর দেওয়া হয়। এখানে প্রতি ক্রেডিটের খরচ সাড়ে তিন হাজার টাকা। সেই হিসেবে চার বছরের কোর্স শেষ করতে এখানে গড়ে চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা দরকার হয়।

ফ্যাশনের কারিগর হয়ে উঠতে চান যারা, তারা নিজেদের লক্ষ্যটাকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখেই স্থাপন করে নিতে পারেন।


Source: http://goo.gl/Hh9l7H