Skill Jobs Forum

Career Counseling, Self Development, Skill Enhancer => Career Planning - Career Mapping,- Career Path Findings => Career Planning => Topic started by: jihad on December 05, 2013, 03:24:11 PM

Title: Food Processing technology
Post by: jihad on December 05, 2013, 03:24:11 PM
ফুড প্রসেসিং টেকনোলজি


(http://www.ittefaq.com.bd/admin/news_images/2013/03/14/thumbnails/image_25904.jpg)

ব্যস্ত জীবনে প্যাকেটজাত খাদ্যের বাজার ক্রমাগত বাড়ছেই। সঙ্গে বাড়ছে এই পেশায় কাজের সুযোগ। কাজেই ফুড প্রসেসিংকেও অনেকেই নিজের ক্যারিয়ারের মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করছেন। ফুড প্রসেসিং বিষয়ে কেমন ক্যারিয়ার গড়ে তোলা যায়, তা নিয়েই এই লেখায় জানাচ্ছেন আফরিন জাহান।

খাই খাই করে মন...

অনেকেরই একটা প্রশ্ন প্রায়ই মনে হয়, এই যে আমরা প্যাকেট-প্যাকেট চিপস (খাঁটি বাংলায় যা আসলে আলুভাজা) খেতে এত পছন্দ করি, এর মধ্যে তো চিপসের পরিমাণ খুবই কম। অনেকেরই মনে হতে পারে, 'কোম্পানিগুলো কি গ্রাহকদের বোকা মনে করে? বেলুনের মতো বাতাস ভরেই প্যাকেট ফুলিয়ে রাখে, যাতে দেখলে মনে হয়, আহা কত্ত চিপস! কিন্তু প্যাকেট খুলতে বাতাসও শেষ, চিপসও শেষ।' কোনোদিন কি সত্যিই এটা নিয়ে একটু চিন্তা করে দেখেছি যে, এই বাতাস ভরে প্যাকেট ফুলিয়ে রাখার অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না? খোঁজ নিলে জানতে পারবেন, এর পেছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কারণ। আর এরই নাম ফুড প্রসেসিং।

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কী?

ফুড প্রসেসিং শব্দের অর্থ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ। সাধারণ কাঁচামাল বা র-ম্যাটেরিয়ালকে হরেক রকমের প্রযুক্তির সাহায্যে খাওয়ার উপযোগী করে তোলার নামই হলো ফুড প্রসেসিং। ফুড সায়েন্স বা টেকনোলজির একটি বিশেষ অংশই প্রক্রিয়াকরণ। ভাজা আলুর কথা না হয় বাদই দিলাম, ছোট বেলায় মা-খালাদেরও তো দেখেছি আলু পাতলা পাতলা করে কেটে রোদে শুকিয়ে নিতে। সেটাও ছিল এক ধরনের প্রসেসিং। রোদে শুকিয়ে কাঁচা আলু পাঁপড়ের মতো হয়ে যেত, অর্থাত্ রোদের তাপে সেগুলো প্রসেসড হয়ে যেত। সেই প্রসেসড শুকনা আলু বিকেলে ভেজে খাওয়া হত ছোটবেলায়। এখনকার এই ব্যস্ত সময়ে আর সেই হাতে খাবার তৈরি করার সময় নেই। আর ঠিক সে কারণেই দোকানের চিপস-ই ভরসা। কেবল চিপস-ই নয়, অনেক খাবারেই আমরা নির্ভর করতে শুরু করেছি প্যাকেটজাত খাবারের উপর।

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের সুবিধা

মানুষের হাতে কাজ যত বাড়ছে, সময় তত কমছে; আর তার সঙ্গে তালমিলিয়ে বাড়ছে প্রসেসড ফুডের চাহিদা। খাবার মুখে তোলার আগে বানানোর প্রক্রিয়াটাকে যথাসম্ভব শর্টকাটে সেরে ফেলাই এখন লক্ষ্য। যেকোনো সুপারমার্কেটে গেলেই দেখা যাবে সারি সারি প্যাকেট করা খাবার, প্যাক করা ড্রিংকিং ওয়াটার। শুধু তাই নয়, মাছ-মাংসও মিলছে দোকানের প্যাকেটে। আবার জুসও রয়েছে এসব প্যাকেট খাবারের তালিকার অন্যতম শীর্ষে। বাংলাদেশের বাজারে 'রেডি টু ইট'জাতীয় খাবারের চল খুব বেশিদিন হলো না হলেও এখন একটু বড় দোকানগুলোতে মিলছে এসব খাবার। রেডি মিল, অর্থাত্ প্যাকেট খুলে শুধুমাত্র গরম পানি ঢাললেই খাবার রেডি। নুডলস থেকে বিরিয়ানি?সবকিছুর রয়েছে রেডি-মিল ভার্সন। তবে এটা ভাবা কিন্তু ভুল হবে যে, ফুড প্রসেসিং শুধুমাত্র একটা শর্টকাট। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শুধু সময় বাঁচিয়েই আমাদের উপকার করে না, খাবারের পুষ্টিগুণ, স্বাদ এবং সুগন্ধ বাড়ানো, খাবার যাতে তাড়াতাড়ি নষ্ট না হয়ে যায়, তার ব্যস্থা করা (প্রিজার্ভেশন), খাবার থেকে বিষাক্ত উপাদানগুলো বের করে তাকে স্বাস্থ্যপোযোগী করে তোলা (স্টেবিলাইজেশন)?এ সবই খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমেই করা হয়। ছোটবেলায় স্কুলে একটা সময় বিজ্ঞান বইয়ে পাস্তরাইজেশনের কথা পড়ানো হয়েছে। পাস্তরাইজেশনও এক ধরনের প্রসেসিংই।

কেমন এই পেশার ভবিষ্যত্

সুপার মার্কেট সংস্কৃতি এবং ভোক্তা আচরণের বড় একটি পরিবর্তন এসেছে ফুড প্রসেসিংয়ে। এ বিষয়ে আগ্রহ থাকলে ক্যারিয়ারের জন্য সেটা হতে পারে একটি প্লাস পয়েন্ট। কয়েখটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, আগামী ২ থেকে ৩ বছরে বাংলাদেশের ফুড প্রসেসিং সেক্টর বাড়বে ১০ শতাংশেরও বেশি। এই খাতে মূলত বিভিন্ন ধরনের খাবার প্রসেস, প্রিজার্ভ, প্যাক এবং স্টোর করা হয়। এ সংক্রান্ত যেকোনো কাজেই গড়ে উঠতে পারে আপনার ক্যারিয়ার।

কাজের ধরন

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণকালীন প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপ যাতে বিধিসম্মতভাবে সম্পূর্ণ করা হয় এবং বিএসটিআইয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী যাতে প্রতিটি খাবারের খাদ্যমান নিশ্চিত করা যায়, সেটা দেখাই এই সেক্টরে কাজের প্রধান দায়িত্ব। মূলত কাঁচামাল ঠিকমতো সরবরাহ হচ্ছে কি না, প্রক্রিয়াকরণে কোনো ফাঁক থেকে যাচ্ছে কি না, দরকারি যন্ত্রপাতি ঠিকমতো কাজ করছে কি না, সেগুলোর টিকমতো দেখাশোনা হচ্ছে কি না, খাবারে ভুলবশত কোনো অবাঞ্চিত বস্তু মিশে যাচ্ছে কি না, খাবারের পুষ্টিগুণ বজায় থাকছে কি না, এই ব্যাপারগুলোর উপর লক্ষ রাখাই পেশাদার ফুড টেকনোলজিস্ট, টেকনিশিয়ান বা ইঞ্জিনিয়ারের কাজ। কাজের মূল বিভাগগুলো হলো ম্যানুফ্যাকচারিং, প্রসেসিং, প্রিজার্ভেশন, প্যাকেজিং এবং ক্যানিং। এ ছাড়া যে বিভিন্ন পদে কাজ করা যেতে পারে তার কিছু নিচে আলোচনা করা হলো।

অর্গানিক কেমিস্ট :কাঁচামাল থেকে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের তত্ত্বাবধান করা।

বায়োকেমিস্ট :খাবারের ফ্লেভার, টেক্সচার, স্টোরেজ এবং কোয়ালিটি নজরে রাখতে হয়।

অ্যানালিটিক্যাল কেমিস্ট্রি :খাদ্য পণ্যের গুণগত মানের দিকে লক্ষ্য রাখতে হয়।

হোম ইকোনোমিস্ট :এদের ডায়াটেটিক্স-এর বিষয়েও জানতে হয়, খাবারের পুষ্টি এবং উপকারিতার দিকটাও দেখতে হয়।

ইঞ্জিনিয়ার :ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রির প্ল্যানিং, ডিজাইনিং, ইমপ্রুভিং, মেনটেন্যান্স এবং প্রসেসিং সিস্টেম তদারকির কাজ করার জন্য কেমিক্যাল, মেকানিক্যাল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল, ইলেকট্রিক্যাল, সিভিল এবং এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজন হয়।

রিসার্চ সায়েন্টিস্ট :খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ-সংক্রান্ত যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অর্থাত্ খাবারের উত্পাদন, গুণমান, স্বাদবৈশিষ্ট্য, পুষ্টিগত গুরুত্ব ইত্যাদি বিষয়ে গবেষণা এবং উন্নয়নের কাজ করেন এই ধরনের গবেষক এবং বিজ্ঞানীরা।

ম্যানেজার এবং অ্যাকাউন্ট্যান্ট :অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ এবং ফাইন্যান্সিয়াল কাজকর্ম এদেরকেই দেখাশোনা করতে হয়।

কাজের সুযোগ

ফুড রিসার্চ ল্যাবরেটরি, ফুড হোলসেলার, হসপিটাল, ক্যাটারিং সংস্থা, রিটেলার, রেস্তোরাঁ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পাওয়া যেতে পারে। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে গেলে যে ধরনের বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করা প্রয়োজন তা হলো, হোম সায়েন্স (সঙ্গে ফুড টেকনোলজি, নিউট্রিশন বা ফুড সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে স্পেশালাইজেশন করতে হয়)। এ ছাড়াও ব্যাকটিরিওলজি বা টক্সিকোলজি নিয়ে পড়াশোনা করলে প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রি-তেও কাজ করার সুযোগ মেলে। আবার অর্গানিক কেমিস্ট্রি, বায়োকেমিস্ট্রি বা অ্যানলিটিক্যাল কেমিস্ট্রি নিয়ে পড়াশোনা করলে ফুড টেকনোলজিক্যাল ল্যাবরেটরি বা কোয়ালিটি কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্টেও কাজের সুযোগ পাওয়া যায়। পাশাপাশি এই ইন্ডাস্ট্রিতেও আরও কয়েক ধরনের কাজ আছে। যেমন, বেকারি, মিট প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকিং, পোলট্রি, ফিস প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকিং, ফুড ব্যাচ মেকার, ফুড কুকিং মেশিন অপারেটর অ্যান্ড টেন্ডার, ফুড রোস্টিং অ্যান্ড বেকিং মেশিন অপারেটর ইত্যাদি। আগ্রহীরা এখনই প্রস্তুতি শুরু করুন।


Source: http://goo.gl/wdJCsK