Skill Jobs Forum

Career Counseling, Self Development, Skill Enhancer => Career Planning - Career Mapping,- Career Path Findings => Career Planning => Topic started by: jihad on December 05, 2013, 02:58:48 PM

Title: Career on homiopyathi
Post by: jihad on December 05, 2013, 02:58:48 PM
পেশা হিসেবে হোমিওপ্যাথি

(http://www.ittefaq.com.bd/admin/news_images/2013/02/28/thumbnails/image_22452.jpg)

প্রযুক্তির উন্মেষ ঘটিয়ে দ্রুত এগিয়ে চলেছে বিশ্ব। তারই ধারাবাহিকতায় নব নব পেশার সম্মিলন ঘটে চলেছে আমাদের চারপাশে। মানুষ স্বাভাবিকভাবেই আধুনিতাকে স্বাগত জানিয়ে থাকে। ফলে আধুনিকতা সমৃদ্ধ পেশার চাহিদা সবসময়ই বৃদ্ধির পথে। সারাবিশ্বে আধুনিকতার উন্নয়নের সাথে সাথে এমন অনেক পেশা রয়েছে যাদের চাহিদা বিন্দুমাত্র হরাস পায়নি। হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার তার মধ্যে অন্যতম। হোমিওপ্যাথিক শিক্ষা অর্জন করেই হতে হয় হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার।

বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশেই হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সার যথেষ্ট কদর রয়েছে। হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সার অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে হোমিওপ্যাথিক ঔষধে কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। ফলে এ সংক্রান্ত চিকিত্সা সেবা গ্রহণ করতে আমাদের দেশে প্রচুর মানুষ রয়েছে। চিকিত্সাশাস্ত্রের অন্যতম একটি ক্ষেত্র হোমিও চিকিত্সা। এই চিকিত্সা যারা প্রদান করেন তাদেরকেই মূলত হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার হিসেবে বিবেচিত করা হয়।

বাংলাদেশে হোমিও চিকিত্সার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে স্বল্প খরচে চিকিত্সা সেবা প্রদানের কারণে এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াবিহীন চিকিত্সার কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ হোমিও চিকিত্সার উপর নির্ভরশীল। ফলে হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলে আজীবন উপার্জন করা সম্ভব। বরং এই পেশার সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে এই পেশাতে নিয়োজিত ডাক্তারদের যত অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পাবে ততই আয় বৃদ্ধি পেতে থাকে। এমনকি হোমিও চিকিত্সকরা আজীবন চিকিত্সা প্রদানের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে যেতে সক্ষম।

সুবিধা :হোমিও চিকিত্সক হিসেবে ডিএইচএমএস কোর্স (ডিপ্লোমা) এবং বিএইচএমএস কোর্স (ডিগ্রি) সম্পন্নকারীরা হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার হিসেবে সরকার কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হওয়ার মাধ্যমে সারাদেশে হোমিও চিকিত্সা প্রদান করতে পারেন। এ ছাড়াও শিক্ষাসম্পন্নকারীরা সরকার কর্তৃক পরিচালিত বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়োগ পেতে সক্ষম। বাংলাদেশের ১৫ কোটি জনগোষ্ঠীকে অ্যালোপ্যাথিক চিকিত্সা কার্যক্রমের আওতায় আনা এখনও সম্ভবপর হয়ে উঠেনি। ফলে হোমিওপ্যাথি ডাক্তারদের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে সারা দেশব্যাপী।

বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সা সংক্রান্ত পড়ালেখা সম্পন্ন করার পর হোমিও ডাক্তার হিসেবে প্রত্যেকেই একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর অর্জন করে। যার ফলে সরকারি চাকরির উপর নির্ভরশীল না হয়ে বেশিরভাগই স্ব উদ্যোগে চিকিত্সা সেবায় নিয়োজিত হয়ে থাকেন। এই পেশাতে উল্লেখযোগ্য সুবিধা হচ্ছে, একজন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তে নিজ সুবিধাজনক স্থানে চিকিত্সা সেবা শুরু করতে সক্ষম। এই পেশাতে সদ্য পাশ করা একজন ডাক্তার প্রাথমিকভাবে প্রতিমাসে ৮-১৫ হাজার টাকা উপার্জন করেত সক্ষম হয়ে থাকে। তবে এই পেশাতে যোগ্যতার দাম অনেক বেশি। একজন রোগীকে ডাক্তার হিসেবে কত দ্রুত সুস্থ করতে পারেন অর্থাত্ হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সায় একজন চিকিত্সকের হাতের যশের উপর নির্ভর করে উপার্জনের পরিমাণ। অভিজ্ঞতার সাথে সাথে বৃদ্ধি পেতে পারে একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সকের প্রতিমাসের উপার্জনের পরিমাণও। অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণের মাধ্যমে চিকিত্সায় সফল একজন চিকিত্সকের প্রতিমাসের বেতন ১৫-৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ফলে ক্যারিয়ার হিসেবে যে কেউ এই পেশাকে গ্রহণ করতে পারেন। সেই সাথে দেশের চিকিত্সা সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করনের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতের উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারেন।

কোর্স ও পড়ালেখা :বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ২টি শিক্ষা কোর্স ও একটি ট্রেনিং কোর্স চালু আছে। শিক্ষা কোর্স হলো- ১. ডিপ্লোমা কোর্স ও ২. ডিগ্রি কোর্স এবং ডিএইচএমএস প্রাপ্ত উচ্চতর প্রশিক্ষণদানের জন্য আছে ১ বছর মেয়াদি পোস্ট ডিপ্লোমা ট্রেনিং ইন হোমিওপ্যাথি কোর্স। এখানে দিবা ও নৈশ বিভাগ নামে দুটি বিভাগ রয়েছে। দিবা বিভাগের অধীনে ডিপ্লোমা কোর্স (ডিএইচএমএস) ও ডিগ্রি কোর্স (বিএইএমএস) এবং ট্রেনিং কোর্স রয়েছে। আর নৈশ বিভাগে রয়েছে ডিপ্লোমা কোর্স (ডিএইচএমএস)।

ডিএইচএমএস কোর্স

ডিএইচএমএস (ডিপ্লোমা ইন হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি) কোর্স ৪ বছর মেয়াদি এবং বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড, ঢাকা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। কোর্স শেষে ৬ মাস ইন্টার্নি করতে হয়। এই কোর্সে দিবা ও নৈশ বিভাগের যেকোনো বিভাগে ভর্তি হওয়া যায়।

ভর্তির যোগ্যতা

স্বীকৃতিপ্রাপ্ত যেকোনো শিক্ষাবোর্ড থেকে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় (যেকোনো গ্রুপে) উত্তীর্ণ হতে হবে। উচ্চতর ডিগ্রিপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

বিএইচএমএস কোর্স

বিএইচএমএস (ব্যাচেলর অব হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি) কোর্স ৫ বছর মেয়াদি এবং ১৯৮৫-৮৬ সাল থেকে কার্যকর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএইচএমএস কোর্সের নিয়মাবলী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। কোর্স শেষে ১ বছর ইন্টার্নি করতে হয়।

ভর্তির যোগ্যতা

স্বীকৃতিপ্রাপ্ত যেকোনো শিক্ষা বোর্ড থেক এইচএসসি/সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান গ্রুপে (প্রি-মেডিকেল) চলতি বছরে উত্তীর্ণ হতে হবে।

পোস্ট ডিপ্লোমা ট্রেনিং ইন হোমিওপ্যাথি (পিডিটি হোম)

ডিএইচএমএসপ্রাপ্ত ডাক্তারদের উন্নত শিক্ষা ও ট্রেনিং দেয়ার মাধ্যমে হোমিওপ্যাথিতে দক্ষ প্র্যাকটিস উত্সাহিত করা, হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সা বিজ্ঞানে সকল বিষয়ে পোস্ট ডিপ্লোমা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা, হোমিও প্র্যাকটিশনারদের জন্য অব্যাহত মেডিকেল শিক্ষা এর সুযোগ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যেই প্রধানত পোস্ট ডিপ্লোমা ট্রেনিং ইন হোমিওপ্যাথিক কোর্স চালু করা হয়েছে।

ভর্তি যোগ্যতা

ক. হোমিওপ্যাথিক বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কোনো হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজে ৪ বছর অধ্যয়ন শেষে ডিএইচএমএস ফাইনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ৬ মাসের ইন্টার্নি সমাপ্ত করতে হবে।

খ. ডিএইচএমএস পাস করার পর ২ বছর অতিবাহিত হতে হবে এবং হোমিওপ্যাথিক বোর্ড থেকে প্র্যাকটিশনার রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত হতে হবে। পল্লী এলাকায় কাজ করেছেন বা কর্মরত আছে এমন প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়।

গ. ডিএইচএমএস কোর্স অধ্যয়নকালে কোনো ব্রেক অব স্টাডি থাকা চলবে না। কোর্সের মেয়াদ মোট ১ বছর। তাই মেয়াদকে ৬ মাস করে দুটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে।

আমাদের দেশে চাকরির পদের তুলনায় চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা দিন দিনই বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। ফলে প্রতিবছরই ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা। বাস্তবতার নিরীক্ষে বাংলাদেশে প্রয়োজন বিশেষায়িত শিক্ষার। যার মাধ্যমে শিক্ষা সম্পন্ন করার পরপর কেউ যেন চাকরির পিছনে না ছুটে স্বনির্ভরতার সাথে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়ে উঠে। এরই ধারাবাহিকতায় হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সায় ডিপ্লোমা/ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে দক্ষ হোমিও চিকিত্সক রূপে ক্যারিয়ার শুরু করা সম্ভব। হোমিও চিকিত্সায় নিয়োজিত হলে এবং সফলভাবে চিকিত্সা কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম হলে আপনার ক্যারিয়ার আজীবন সচল থাকবে কোন বিরতি ছাড়াই।

বাংলাদেশে অগনিত মানুষ রয়েছে যারা কেবলমাত্র হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সা সেবা গ্রহণ করে থাকে। বিশেষ করে হোমিওপ্যাথি চিকিত্সা স্বল্পমূল্যে করা সম্ভব হওয়ার কারণে এবং হোমিও ঔষধের মূল্যে অনেক কম হবার কারণে বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠী হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সা সেবার উপর নির্ভরশীল। যার ফলশ্রুতিতে এই পেশাতে নিয়োজিত চিকিত্সকদের ক্যারিয়ারে প্রতিষ্ঠা পেতে বেশিদিন প্রয়োজন হয় না।

হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজে শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে স্বল্প ব্যায়ে এবং স্বল্পসময়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সক হিসেবে চিকিত্সা প্রদান করা সম্ভব। সেই সাথে দেশের স্বাস্থ্যখাতে সরাসরি অবদান রাখার পাশাপাশি নিজের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা আনয়ন সম্ভব। হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ক্যারিয়ারে সফল হতে আপনি যদি এই পেশাতে ভব্যিষতে কাজ করতে চান তবে অবশ্যই দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।

Source: http://goo.gl/1EEUyQ