আমিনুর রহমান
তথ্যপ্রযুক্তি ও বিশ্বায়নের এই যুগে কর্মমুখী শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। বতর্মান সময়ে পাঠ্যপুস্তক নির্ভর জ্ঞান দিয়ে চাকরি বা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে যারা স্বাবলম্বী হতে চান তাদের জন্য কর্মমুখী শিক্ষাই হতে পারে একমাত্র পছন্দ। কারণ কর্মমুখী শিক্ষার মাধ্যমে দ্রুত কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করা যায়। এককথায় কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত হলে গতানুগতিক শিক্ষার মতো চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হবে না। বরং চাকরিই কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত ডিগ্রিধারীদেরকে খুঁজে বের করে নেয়। ফলশ্রুতিতে দেশ আর্থ-সামাজিকভাবে উপকৃত হয়ে থাকে। তাই দেশের শিক্ষার্থীদেরকে প্রায়োগিক ও সময়োপযোগী শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার দেশের বিভিন্ন জেলায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বা সমমানের প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছে। এগুলো বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের অধীনে পরিচালিত। ন্যূনতম এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় সাধারণ গণিত বা উচ্চতর গণিতে কমপক্ষে জিপিএ ৩.০-সহ ন্যূনতম ৩.৫ জিপিএপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারে। এ ছাড়া এসএসসিসহ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড অনুমোদিত ২ বছর মেয়াদি ট্রেড কোর্স উত্তীর্ণ প্রার্থীরা আবেদন করতে পারে। প্রতি বছরের জুন মাসে এর ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে থাকে, পাশাপাশি যথাসময়ে দ্বিতীয় শিফটের ভর্তি প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়। তবে এর জন্য কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের নিজস্ব ওয়েবসাইট www.techedu.gov.bd এর মাধ্যমেই নির্ধারিত ফরম পূরণ করে আবেদন করতে হয়।
ভর্তির যোগ্যতা
এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় সাধারণ গণিত বা উচ্চতর গণিতে কমপক্ষে জিপিএ ৩.০০ সহ ন্যূনতম ৩.৫০ জিপিএপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।
কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামসমূহ
৬ মাস মেয়াদি কোর্সগুলো হলো—প্রফেশনাল ডিপ্লোমা ইন অটোমোবাইল, ট্রেনিং অ্যান্ড বিজনেস টাইপিং, সার্টিফিকেট ইন মেডিকেল আল্ট্রাসাউন্ড।
১ বছর মেয়াদি কোর্সগুলোর মধ্যে রয়েছে ডিপ্লোমা ইন টেকনিক্যাল এডুকেশন, ডিপ্লোমা ইন ভোকেশনাল এডুকেশন, ডিপ্লোমা ইন মেডিক্যাল আল্ট্রাসাউন্ড, সার্টিফিকেট ইন ভোকেশনাল এডুকেশন, সার্টিফিকেট ইন হেলথ টেকনোলজি, ন্যাশনাল স্কিল স্ট্যান্ডার্ড ২, ন্যাশনাল স্কিল স্ট্যান্ডার্ড ৩, সার্টিফিকেট ইন সেক্রেটারিয়াল সায়েন্স।
অন্যদিকে ২ বছর মেয়াদি কোর্সগুলোর মধ্যে রয়েছে ডিপ্লোমা ইন ফরেস্ট্রি, ডিপ্লোমা ইন কমার্স, ডিপ্লোমা ইন অ্যানিম্যাল হেলথ অ্যান্ড প্রোডাকশন টেকনোলজি, এইচএসসি (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট), এইচএসসি (ভোকেশনাল), এসএসসি (ভোকেশনাল), এসএসসি (ভোকেশনাল টেক্সটাইল), দাখিল (ভোকেশনাল), সার্টিফিকেট ইন ট্রেড কোর্স। এর বাইরে ডিপ্লোমা ইন হেলথ টেকনোলজি কোর্সটি করানো হয় ৩ বছর মেয়াদে।
আর ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্সগুলো করানো হয় ইলেক্ট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, এগ্রিকালচার, ফিশারিজ, জুট টেকনোলজি প্রভৃতি বিষয়ে। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে যুগের চাহিদা পূরণে কারিগরি শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত বিষয়ের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
Source: http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/cariar/2015/09/02/69979.html