চাকরিজীবনের শুরুতে যেদিকে লক্ষ রাখবেন
আপনি যে পেশার সঙ্গেই জড়িত থাকেন না কেন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে অর্থ উপার্জন অনেক কষ্টের। অনেকেই ধনী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর থাকেন। নিজের বাড়ি-গাড়ি করতে চান না এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। কিন্তু মনে রাখা প্রয়োজন, যেকোনো স্বপ্ন পূরণে অর্থ আবশ্যক।
তাই নিজের আর্থিক পরিকল্পনা করা অতি জরুরি। অন্যথায় আপনি যতই উপার্জন করুন না কেন, তা আপনার জন্য পর্যাপ্ত হবে না। কিন্তু যারা সদ্য কর্মজীবনে প্রবেশ করেছে, শুরুর দিকে তাদের অনেকেই সীমিত পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে। সে ক্ষেত্রে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য যথাযথ আর্থিক পরিকল্পনা করা খুব জরুরি। সে উদ্দেশ্যে টাইমস অব ইন্ডিয়া কিছু উপায়ের কথা জানিয়েছে। জেনে নিন কী সেগুলো।
১. বাজেট নির্ধারণ করুন এবং সঞ্চয় শুরু করুন
বাজেট এমন এক প্রক্রিয়া, যা আপনার আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখে। প্রতি মাসে আপনার কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়, কোন কোন খাতে ব্যয় হয় তার এক তালিকা তৈরি করে হিসাব রাখতে হবে। তালিকাটি এক্সএল, মোবাইল অ্যাপস কিংবা খাতায় লিপিবদ্ধ করে রাখতে পারেন। এভাবে সুষ্ঠুরূপে হিসাব রাখলে তিন-চার মাস পর লক্ষ করবেন, আপনার অতিরিক্ত খরচ কমে যাবে অনেকাংশে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে নানা বিপদ কিংবা নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য অর্থ সঞ্চয় করতে হবে।
২. আর্থিক পরিকল্পনার লক্ষ্য নির্ধারণ
আপনি উপার্জনের অর্থ দিয়ে রীতিমতো সঞ্চয় শুরু করলেন। কিন্তু একটি সাধারণ ভুল সবাই করে তা হলো, সঠিক সঞ্চয়ের পরিকল্পনা অনেকে করতে পারে না। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি—এ তিন ধরনের সঞ্চয় করলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ হবে। মনে রাখতে হবে, যে উদ্দেশ্যে সঞ্চয় করছেন, তা পূরণে কত সময় ব্যয় হবে এবং কী পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করতে হবে।
৩. সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ
কথায় আছে, 'টাকায় টাকা আনে'। বহুল প্রচলিত এই প্রবাদবাক্যটি কিন্তু ফেলে দেওয়ার মতো নয়। নতুন আয়কারীরা অনেক সময় বুঝতে পারে না কোথায় বিনিয়োগ করা সুবিধাজনক। টাকা মূলত বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগের মাধ্যমে বেড়ে যায় বহুগুণ। প্রশ্ন হলো, বিনিয়োগটা সঠিক সময়ে, সঠিক জায়গায় করছেন তো? সঠিক পরিকল্পনায় এগোলে বছর শেষে আপনি অবশ্যই লাভের মুখ দেখবেন।
স্বল্প সময়ের জন্য আপনি স্বল্পমেয়াদি ঋণ তহবিলে বিনিয়োগ করতে পারেন, মাঝারি মেয়াদির জন্য আপনি সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে পারেন। তবে ভবিষ্যতের জন্য ডিপিএস, এফডিআর-এ অর্থলগ্নি করতে পারেন।
৪. জীবনবিমা
জীবনবিমা এমন একটি চুক্তি, যেখানে এককালীন অর্থ বা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কিস্তি পরিশোধের প্রতিদানে বিমাগ্রহীতার মৃত্যুতে অথবা নির্ধারিত বছরসমূহের শেষে বিমাকারী বৃত্তি অথবা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বিমাকারী বিমাগ্রহীতাকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে বিমাগ্রহীতার কাছ থেকে বিভিন্ন কিস্তিতে যে অর্থ গ্রহণ করে থাকে, তাকে প্রিমিয়াম বলা হয়। আপনার মৃত্যুর পর যেন আপনার পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন না করে, সে জন্য এটা করে রাখা ভালো।
৫. স্বাস্থ্যবিমা
বর্তমানে চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল খাতে পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্যবিমা হচ্ছে ব্যক্তির চিকিৎসা খরচ মেটানোর জন্য করা বিমা । স্বাস্থ্যসেবার সামগ্রিক ঝুঁকি ও স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ব্যয়ের আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, একজন বীমাকারী বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যবিমা গ্রহণ করতে পারেন। যেমন মাসিক প্রিমিয়াম অথবা পে রোল ট্যাক্স, যা বিমার চুক্তি অনুযায়ী তাঁর স্বাস্থ্যসেবার জন্য জরুরি অবস্থায় চিকিৎসা জন্য প্রয়োজনীয় খরচ জোগাবে। বিয়ে এবং সন্তান জন্ম হওয়ার পর এই বিমা করা উত্তম।
Source: Daily news. (Source: http://ca.jobsbd.com/?p=1188)