যুগোপযোগী পত্র-দরখাস্ত
যুগ বদলেছে। অথচ পত্র-দরখাস্তগুলোর বিষয় রয়ে গেছে আগের মতোই গৎবাঁধা। কেমন হবে যদি পত্র-দরখাস্ত লেখা হয় যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে? তারই কিছু নমুনা দেওয়া হলো।
অনুপস্থিতির জন্য ছুটির আবেদন
জনাব,বিনীত নিবেদন এই যে আমি আপনার বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির একজন মোটামুটি নিয়মিত শিক্ষার্থী। চার দিন আগে স্কুলে আসার ঠিক আগমুহূর্তে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আমি গালে একটি ঢাউস সাইজের পিম্পল দেখতে পাই। বিদঘুটে জিনিসটা দেখে তখনই চোখে প্রায় দুই ফোঁটা পানি চলে এসেছিল। মানসিক দিক দিয়ে প্রচণ্ড ধাক্কা খাই আমি। এই আপদ লইয়া আমি কী করিব! কীভাবে স্কুলে সবাইকে মুখ দেখাব ভাবতেই আমার গা কয়েকবার শিউরে উঠেছে! শারীরিক এবং মানসিক দিক দিয়ে অসুস্থ থাকার কারণে তাই তিন দিন আমি স্কুলে আসতে পারিনি।
অতএব, উপরিউক্ত বিষয়ের সুষ্ঠু মানবিক দিক বিবেচনাপূর্বক আমাকে উক্ত তিন দিনের ছুটি দিয়ে বাধিত করবেন।
বিনীত নিবেদক
ছাদিকা আক্তার
নবম শ্রেণি, রোল: ৩৪
টাকা চেয়ে বাবার নিকট পত্রশ্রদ্ধেয় আব্বা,
আশা করি, পরম করুণাময়ের অশেষ কৃপায় সবাই ভালো আছেন। আমার অবস্থা আর কী বলব! পুরাই ছ্যাড়াব্যাড়া! ভার্সিটিতে প্রচুর প্যারা দিচ্ছে! পর সমাচার এই যে আপনার পাঠানো ১০ হাজার টাকা সাড়ে পাঁচ দিনেই শেষ! পড়াশোনা বাবদ বেশ খরচ হচ্ছে। আপনাকে তো অনেক আগেই বলেছি, বইয়ের চেয়ে এখন ঢের বেশি পড়া ইন্টারনেটে! প্রায়ই রাত জেগে ইন্টারনেটে পড়তে হয়! নইলে ভালো করব কীভাবে? এদিকে গত তিন মাসের ইন্টারনেট বিল জমে আছে। পড়ার প্রচণ্ড চাপে গত সেমিস্টারে দুই সাবজেক্টে ভালো করতে পারিনি। এ বাবদও ভার্সিটিতে কিছু টাকা দিতে হবে। আপনি তো ফোন করলেই শরীরের দিকে খেয়াল রাখতে বলেন। শরীর সুস্থ না থাকলে কিসের পড়া কিসের কী! তাই জিমে ভর্তি হয়েছিলাম। সেখানেও দুই মাসের টাকা বাকি। এ ছাড়া গলির মোড়ের চা দোকানদারের কাছে ৭৬৩, ময়না মামার ঝালমুড়ির দোকানে ৩২০, আর আমার রুমমেট আরিফের কাছ থেকে সময়ে সময়ে ২০-৩০ টাকা করে নিতে নিতে প্রায় শ পাঁচেক হয়ে গেছে। ছেলেটা বেশ ভালো আছে। নরম-সরম। বিপদে-আপদে কখনোই ?না? করে না। এ মাসে ওর টাকাটা না দিলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে! যা হোক, আপনি অতি সত্বর আরও ১০ হাজার টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
ইতি
আপনার আদরের
রকি হাওলাদার
Sources: https://goo.gl/AK8Q3m