যেসব কারণে হাতছাড়া হয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত চাকুরী(http://www.priyo.com/files/story/201401/door.jpg)
আজকের এই দুর্মূল্যের বাজারে চাকরি নামের সোনার হরিনের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে আমরা সবাই কম-বেশি ক্লান্ত। আমাদের সমাজের প্রচলিত ধারণা এই যে, চাকরি পেতে হলে ভাগ্যের কারসাজির সাথে সাথে থাকা চাই মামা-খালুর জোর। এই ধারণা যে পুরোপুরি ভ্রান্ত তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। একটু সচেতন হলেই আপনি খুব সহজেই পেয়ে যেতে পারেন আপনার ড্রীম জব বা স্বপ্নের চাকরী। এই তুমুল প্রতিযোগীতার মাঝেও কিভাবে নিজেকে আলাদাভাবে তুলে ধরবেন তা নিয়েই আজকের এই লেখায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
চাকরী খোঁজার ক্ষেত্রে সবসময় ২০/২০/৬০ নিয়ম অবলম্বন করুনঅফিসগুলোতে আবেদনপত্র পাঠাতে আপনার সময়য়ের মাত্র ২০% ব্যয় করুন। বাকি ২০% সময় আপনার জীবনবৃত্তান্ত ও আবেদনপত্র গুছিয়ে রাখতে ব্যবহার করুন, যাতে করে চাকরীদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো খুব সহজেই আপনাকে খুঁজে পায়। বাকি ৬০% সময় নেটওয়ার্কিংয়ে কাজে লাগান।
খুব কম সময়ের জন্য হলেও নিজের জীবনবৃত্তান্তে একবার চোখ বুলিয়ে নিনমাত্র ১০ সেকেন্ড সময় নিয়ে ভালোভাবে একবার নিজের জীবনবৃত্তান্ত পড়ুন। এরপর দেখুন সেখানে আপনার দক্ষতাগুলো খুব সহজেই চোখে পড়ছে কিনা। একজন চাকরীদাতা সামান্য সময়ের মধ্যে অনেকগুলো আবেদনপত্র বিচার করেন। তাই আবেদনপত্র এবং জীবনবৃত্তান্তের শুরুর দিকেই নিজের দক্ষতাগুলো উল্লেখ করুন।
নেটওয়ার্কিং এর প্রতি অধিক গুরুত্ব দিনবেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজারেরা রেফারেন্সের মাধ্যমেই কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকেন। তাই কোন প্রতিষ্ঠানে আবেদন করার আগে লিংকডইন বা অন্য কোন মাধ্যমের সাহায্য নিয়ে ঐ প্রতিষ্ঠানের সাথে আপনার মিউচুয়াল কানেকশন খুঁজে বের করুন। হিডেন জব মার্কেটেও পরিচিতি পেতে নেটওয়ার্কিং আপনাকে দারূণভাবে সাহায্য করবে।
আবেগের বশবর্তী না হয়ে কৌশলী হউনচাকরীতে আবেদনের শুরুতেই কোম্পানির নাম-ডাক, লোকেশন, গালভরা নামের পদবি ইত্যাদি দিকে জোর দেবেন না। বরং কোম্পানির সাফল্য-ব্যর্থতার পেছনে আপনার চাকরী কি ভূমিকা রাখবে সে ব্যাপারে প্রশ্ন করুন। এধরনের আচরণ নিয়োগকারীর কাছে আপনার সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা পৌঁছে দেবে।
উত্তরের ফাঁকে প্রশ্ন করে ইন্টারভিউ এর নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়ে আসুনইন্টারভিউ এর ক্ষেত্রে কেবল নিয়োগদাতা প্রশ্ন করছেন এবং আপনি উত্তর দিচ্ছেন এমনটি হতে দেবেন না। চাকরী সম্পর্কে বিস্তারিত জিজ্ঞেস করুন। কাজের ধরণ, আপনার দায়িত্ব/কর্তব্য ইত্যাদি জানতে আগ্রহ দেখান। অনেকসময় আপনি চাকরীটার জন্য একদম উপযুক্ত না হলেও, আপনার প্রত্যয়ী মনোভাব দেখে নিয়োগদাতা আপনাকে সুযোগ দিতেও পারেন।
কথার সাথে কাজের সামঞ্জস্য রাখুন খুব কম সংখ্যক প্রার্থীই অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার আলোকে নিয়োগদাতার প্রত্যাশা পুরণ করতে পারেন। সরাসরি অভিজ্ঞতা ছাড়াই যারা ঠিকমত কাজের ধরণ বুঝে কাজটি করতে পারেন, নিয়োগের ক্ষেত্রে মূলত তাদেরকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। তাই আবেদনপত্র এবং জীবনবৃত্তান্তের সাথে তাল মিলিয়ে আপনার কর্মদক্ষতাও বৃদ্ধি করুন।
একটা নতুন চাকরী পাওয়া অবশ্যই ধৈর্য, অধ্যাবসায় এবং সময়সাপেক্ষ। এর সাথে সাথে নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে একজন অনন্য প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করতে পারবেন আপনি।
প্রিয় পাঠক, আমাদের দেশে কোন অনলাইন জব পোর্টালে আপনার সিভি দেয়া থাকলে তা সপ্তাহে অন্তত ১ বার আপডেট করুন। এতে চাকুরীদাতা প্রতিষ্ঠান কাছে আপনি সক্রিয় চাকুরী সন্ধানকারীদের কাতারে পড়বেন। ফলে, কোন চাকুরিতে আবেদন করলে আপনার ডাক পাবার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।
Source: Internet