Skill Jobs Forum

About Skill Jobs => News and Events => Skill Jobs Career News => Topic started by: Monirul Islam on May 17, 2018, 10:08:05 AM

Title: কাজের অনেক সুযোগ এনজিওতে
Post by: Monirul Islam on May 17, 2018, 10:08:05 AM
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে আমাদের দেশে এনজিওর যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা পরবর্তী সময়ে ত্রাণ ও পুনর্বাসনেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। গ্রামীণ দরিদ্র জনগণের সামাজিক ও অর্থনৈতিক তথা জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে আসে। দেশে আজ ১৬ হাজারেরও বেশি এনজিও রয়েছে। এনজিওতে কাজ করছে বিপুলসংখ্যক জনশক্তি। এককথায়, শিক্ষিত ও দক্ষ তরুণ-তরুণীদের কর্মযজ্ঞের বিশাল ক্ষেত্র তৈরি করেছে এই খাত। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অংশীদার হতে চাইলে আমাদের দেশে বর্তমানে এনজিওগুলোর বেশির ভাগই পল্লী উন্নয়ন ও কৃষি সংস্কার কর্মকাণ্ডে জড়িত। সেই সঙ্গে মানবসম্পদ উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম, জেন্ডার, মানবাধিকার ও আইনি কার্যক্রম এবং ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমও পরিচালনা করে থাকে। এনজিওগুলো এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিপুলসংখ্যক জনশক্তি নিয়োগ করে থাকে। ফলে কর্মসংস্থানের বাজারেও তৈরি হয়েছে বিরাট ক্ষেত্র। বিশেষত দারিদ্র বিমোচন প্রকল্পগুলোয় কর্মসংস্থানের সুযোগ সবচেয়ে বেশি। বলছিলেন সেভ দ্য চিলড্রেন ইউকের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজার কাজী মোহাম্মদ শরফুদ্দিন। তিনি আরো জানান, মাইক্রোক্রেডিট প্রোগ্রামগুলোয় নারী ও পুরুষ কর্মী সমান হারে অংশগ্রহণ করছে। একইভাবে নিরক্ষর তথা অশিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে যেসব ওয়ার্কশপ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়, সেখানে প্রশিক্ষক ও সুপারভাইজার হিসেবে তরুণ-তরুণীরা কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। কাজের ধরন, দায়িত্ব ও পরিসীমা এনজিওগুলো প্রকল্পের ধরন অনুসারে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার পাশাপাশি কর্ম-এলাকার ব্যাপকতা, মনিটরিং কৌশল, ব্যাংকিং সুবিধা, মানবসম্পদ বা কর্মিসংখ্যা, যোগাযোগব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা ও সামাজিক স্থিতিশীলতার ওপর ভিত্তি করে কাজের ধরন, কৌশল ও পরিসীমা নির্ধারণ করে থাকে। এরপর পদ বা অবস্থান অনুসারে কর্মীরা প্রয়োজনীয় আর্থিক বাজেট প্রস্তুতি, কারিগরি ও অন্যান্য লজিস্টিক সহায়তার বাজেট, সুপারভিশন ও মনিটরিং টুলস তৈরি, সময়-নিয়ন্ত্রিত প্রায়োগিক কর্মপরিকল্পনা, সম্পদ জোগানের পরিকল্পনা, সম্ভাব্য স্থানীয় ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা যাচাই, কর্মসূচি-সংশ্লিষ্ট সম্ভাব্য ঝুঁকি-অনিশ্চয়তা, দুর্যোগ মোকাবিলা কর্মকৌশল, প্রশিক্ষণ, কর্মসূচির অগ্রগতি-অবনতি মূল্যায়ন ও পরবর্তী কর্মকৌশল নির্ধারণ, জরিপ, পোস্টার, বুকলেট, লিফলেট, বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ ইত্যাদি কাজ করে থাকে। বলছিলেন কেয়ার বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার মুনমুন এস চৌধুরী। নারীদের সুযোগ বেশি এনজিওগুলোয় গবেষক, মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তবে নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও শিক্ষা কার্যক্রম ক্ষেত্রে। এসব এনজিওতে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে নারীরা বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন ও রাতের স্কুলগুলোয় বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রমে কাজের সুযোগ পাচ্ছে বেশি। এ ছাড়াও পয়োনিষ্কাশন, স্থানীয় রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, কমিউনিটি সেন্টার, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, গ্রোথ সেন্টার, ভোটার তালিকা তৈরি, বন্যা-খরাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও পুনর্বাসন, নির্বাচনী ব্যবস্থা মনিটরিং, মানোন্নয়ন, উৎপাদন ও বিপণন, কৃষিভিত্তিক শিল্পায়ন, পশু ও মত্স্যসম্পদ সংরক্ষণ, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ ইত্যাদি প্রকল্পেও কাজের বিশাল সুযোগ রয়েছে। বলছিলেন ওয়াটার এইড বাংলাদেশের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজার রাজিয়া সুলতানা লুনা। প্রয়োজনীয় দক্ষতা অন্যান্য সেক্টরের মতো এখানেও ধৈর্য, সাহস, পরিশ্রম করার মানসিকতা ও উদ্যম থাকতে হবে। যাঁরা অফিসভিত্তিক চাকরি পেতে ইচ্ছুক, তাঁদের কম্পিউটার-সম্পর্কিত সম্যক জ্ঞান থাকা জরুরি। সেই সঙ্গে সেক্রেটারিয়াল সায়েন্সের ওপর কোর্স করা থাকলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। যাঁরা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করতে চান, তাঁদের সংশি্লষ্ট কোর্স করে নেওয়া উচিত। ফিল্ড স্টাডি, রিপোর্টিং, জনমত জরিপ, অর্থাৎ যাঁরা সামাজিক গবেষণায় আগ্রহী, তাঁদের ভালো নেটওয়ার্কিং স্কিল থাকা দরকার। তবে ভালো উপস্থাপনকৌশল, দলগতভাবে কাজ করার মানসিকতা ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন লেখার জন্য দক্ষতা থাকতে হয়। তা ছাড়া ইংরেজিতে ভালো জ্ঞান থাকা জরুরি। তবে এনজিওতে কাজ করতে চাইলে গ্রামীণ অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি। পদ একেকটি এনজিও একেকভাবে নিজ গঠনতান্ত্রিকতার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়ে থাকে। তবে মোটামুটি সব এনজিওতেই নিচের পদগুলো রয়েছে; যেমন- চেয়ারম্যান, পরিচালনা পর্ষদের অধীনে পরিচালক, গবেষণা পর্ষদের অধীনে গবেষক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এইচআর ম্যানেজার, জনসংযোগ কর্মকর্তা, প্রজেক্ট ম্যানেজার, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, কর্মসূচি সংগঠক ইত্যাদি। সুযোগ-সুবিধা ও চাকরির নিরাপত্তা এনজিওর অবস্থানের ওপর সাধারণত তার কর্মীদের আয় এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তা নির্ভর করে। প্রথম শ্রেণীর এনজিওগুলো মানসম্মত পারিশ্রমিক দিয়ে থাকে। প্রশাসনিক পদে কর্মরত ব্যক্তিদের পারিশ্রমিক এনজিওভেদে ১০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। এ ছাড়া সংগঠক ও মাঠকর্মীদের পারিশ্রমিক ছয় থেকে ১৭ হাজার টাকা হয়ে থাকে। তবে এনজিওর টিকে থাকা নির্ভর করে বৈদেশিক সাহায্য ও নিজ সম্পদের ওপর ভিত্তি করে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে নতুন প্রজেক্ট ও বিকল্প ফান্ড গঠন করা হয়। সে ক্ষেত্রে অনেক সময় তৃতীয় শ্রেণীর এনজিওগুলো মুখ থুবড়ে পড়ে। তবে আশার কথা হচ্ছে, প্রকল্পভিত্তিক হওয়ায় যাঁরা যোগ্য, তাঁরা এক প্রকল্প থেকে অন্য প্রকল্পে সহজেই নিজেদের জায়গা তৈরি করে নিতে পারেন।   সাক্ষাৎকার কাজের অনেক সুযোগ এনজিওতে মুনমুন এস চৌধুরী জেনারেল ম্যানেজার হিউম্যান রিসোর্স ডেভেপলমেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কেয়ার বাংলাদেশ কেয়ারে কাজ করতে চাইলে শিক্ষাগত যোগ্যতা কী হতে হবে? আমাদের এখানে কাজগুলোকে মূলত প্রোগ্রাম ও প্রোগ্রাম সাপোর্ট- এ দুই ভাগে ভাগ করা হয়। প্রোগ্রামে মাঠকর্মী বা প্রজেক্ট অফিসারদের শিক্ষাগত যোগ্যতা গ্রাজুয়েট হলেই চলে। তবে প্রোগ্রাম সাপোর্টের ক্ষেত্রে অর্থাৎ ফিন্যান্স, এইচআর, আইটি এবং এমন আরো যে বিভাগ রয়েছে, সেসব বিভাগের বিভিন্ন পদের জন্য মাস্টার্স পাস হতে হয়। তবে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিলযোগ্য। তাই বলে গ্রাজুয়েশনের নিচে নয়। অন্য কী কী যোগ্যতা থাকতে হয়? আমরা ফ্রেশারদের ক্ষেত্রে সাধারণত উদ্যমী, পরিশ্রমী, দলগতভাবে কাজ করার মানসিকতা আছে কি না- এসব ব্যাপারে প্রাধান্য দিই। তবে আরো যে ব্যাপারগুলো গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলো হচ্ছে ইংরেজি ও কম্পিউটারের জ্ঞান। নিয়োগ পদ্ধতিটি কী? সাধারণত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েই নিয়োগ দিয়ে থাকি। আপনাদের প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপের সুযোগ আছে কি? আছে এবং ইন্টার্নিরা স্টাইপেন্ড পায়। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কী কী সুযোগ-সুবিধা পায়? আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রোগ্রামে যারা কাজ করে তাদের পারিশ্রমিক ১৭ থেকে ৪০ হাজার এবং প্রোগ্রাম সাপোর্টে যারা আছে তাদের পারিশ্রমিক ২৬ থেকে ৬০ হাজার টাকা। আর ইন্টার্নিরা ছয় থেকে ৯ হাজার টাকা পেয়ে থেকে। এ ছাড়াও প্রোগ্রাম ও প্রোগ্রাম সাপোর্টে যারা কাজ করে, তারা বছরে একটি ফেস্টিভাল বোনাস, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটি ফান্ড, মেডিক্যাল অ্যালাউন্স, হাউজিং অ্যালাউন্স ও ট্রান্সপোর্ট অ্যালাউন্স পেয়ে থাকে। নারী কর্মীরা ১৬ সপ্তাহের মাতৃত্বকালীন ছুটি (দুটি), ব্রেস্ট ফিডিং টাইম (দুই বছর), শিশুর এক বছর পর্যন্ত চাইল্ড কেয়ার ও মায়েদের ট্রেনিংয়ের সময় শিশুদের অ্যাটেন্ড্যান্টের থাকা-খাওয়া ফ্রি। এ ছাড়া কেয়ারে কর্মরত অবস্থায় কেউ মারা গেলে ৩০ মাসের বেসিক স্যালারি (গ্রুপ ইনসুরেন্স) পান।

Source: http://infopedia.com.bd/career/job-market/1472