Skill Jobs Forum

Career Counseling, Self Development, Skill Enhancer => Marketing/ Sales Track => Topic started by: Monirul Islam on July 31, 2018, 03:12:28 PM

Title: পেশার নাম ‘ব্র্যান্ড এক্সিকিউটিভ’
Post by: Monirul Islam on July 31, 2018, 03:12:28 PM
পণ্যের ভালো মান নিশ্চিত করলেই বাজারে পণ্যটি জনপ্রিয়তা অর্জন করবে- এমন ধারণা সময়ের স্র্রোতে পাল্টে গেছে। পাল্টানোর এই প্রতিযোগিতায় যে কোনো পণ্যের ব্র্যান্ডিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা যে কেউ আঁচ করতে পারেন বড় কোম্পানির পণ্যে চোখ রাখলে। একটু চোখ মেলে বাজারে তাকালে দেখবেন ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমেই এখন পণ্য পরিচিত করে তোলা হচ্ছে। এটা আসলে সময়েরই চাহিদা। এই ব্র্যান্ডিং বলতে বাজারে পরিচিত অন্যান্য পণ্য থেকে নতুন একটি পণ্য পরিচিত করে তোলাকেই বোঝায়। যে কোনো প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্যগুলো বাজারে জনপ্রিয় করে তুলতে যারা কাজ করেন, তাদেরই বলা হয় ব্র্যান্ড এক্সিকিউটিভ। বড় প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথভাবে পণ্য জনসাধারণের কাছে পৌঁছাতে ব্র্যান্ড ডিভিশন নামে কাজের বড় একটা জায়গা রাখে। এই ব্র্যান্ড ডিভিশনের জনবলই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা দিয়ে নিজ প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত অথবা বাজারজাতকৃত পণ্যের বাজার নিশ্চিত করে। শুধু তাই নয়; পণ্যের সঠিক বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন থেকে শুরু করে তা বাস্তবায়নের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে ব্র্যান্ড এক্সিকিউটিভ তথা প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড ডিভিশন।



যেভাবে শুরু

যে কোনো প্রতিষ্ঠানই এই পেশায় লোক নিয়োগ দেওয়ার আগে ব্যক্তির দক্ষতা এবং যোগ্যতায় যথাযথ গুরুত্ব দেয়। কেননা কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের যে কোনো নতুন পণ্য উৎপাদন পরিকল্পনা থেকে তা যথাযথ বাজারজাতকরণ পর্যন্ত সবই করতে হয় এই ব্র্যান্ড ডিভিশনকে। ব্র্যান্ড কর্মকর্তারা নতুন পণ্য উৎপাদন পরিকল্পনা, ক্রেতার চাহিদা, বাজারে পণ্যের সম্ভাব্যতা যাচাই, পণ্যের আকার ও মোড়কের পরিকল্পনা, বাজারজাতের কলাকৌশল নির্ধারণ থেকে শুরু করে কাদের জন্য এই পণ্য এবং সেই হিসেবে পণ্যের দামও নির্ধারণ করে দেয়। তাছাড়া পণ্য সম্পর্কে ক্রেতার আগ্রহ এবং কোন সময়টায় এটি বাজারে ছাড়লে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে পারবে তাও তাদের মাথায় রাখতে হয়। তারপর উৎপাদিত পণ্যটির বাজারজাত কীভাবে হবে, তা নির্ধারণের মাধ্যমে মার্কেটিং এবং সেলস টিমকে সে অনুযায়ী দিকনির্দেশনা দিতে হয়। পাশাপাশি ক্রেতার চাহিদার কথা মাথায় রেখে সরাসরি বাজার পরিদর্শনও করতে হয় ব্র্যান্ড এক্সিকিউটিভদের। যে কোনো প্রতিষ্ঠানের পণ্য বাজারজাতকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী ব্র্যান্ড ডিভিশনে শুরুতে ব্র্যান্ড এক্সিকিউটিভ এবং ট্রেইনি অফিসার হিসেবে নিয়োগ করা হয়। তারপর যোগ্যতা এবং কর্মদক্ষতা দেখিয়ে দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে সিনিয়র ব্র্যান্ড এক্সিকিউটিভ এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার এবং ম্যানেজার পদে পদোন্নতি লাভ করা যায়।



যোগ্যতার পরিমাপ

সাধারণত ব্র্যান্ড এক্সিকিউটিভ হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করতে চাইলে অনার্স এবং মাস্টার্স শেষ করেই শুরু করা যায়। তবে এর সঙ্গে মার্কেটিং জড়িয়ে থাকায় এখানে আসার আগে বিবিএ এবং এমবিএ করে এলেই ভালো করা যায় সহজে। এখানে শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি থাকতে হবে আত্মবিশ্বাস। আপনাকে সৃজনশীল চিন্তার অধিকারীও হতে হবে।  পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তার সঠিক বাস্তবায়নের দক্ষতা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিশ্রমটাই আপনার অতিরিক্ত যোগ্যতা ধরা হবে এই পেশায়।



নিয়োগ ও বেতন-ভাতা

পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বা পণ্য বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ব্র্যান্ড বিভাগে শুরুতে সাধারণত ব্র্যান্ড এক্সিকিউটিভ অথবা ট্রেইনি অফিসার হিসেবে লোক নিয়োগ দেয়। প্রতিষ্ঠানের আকার এবং ব্যবসা অনুসারে শুরুতেই ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেতন ধরা হয়। পাশাপাশি থাকে প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। কাজে দক্ষতা দেখাতে পারলে এক থেকে দুই বছরের মধ্যে বেতন বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। এখানেই শেষ নয়, দুই থেকে তিন বছরের মাথায় বেতন ৭০ থেকে ৮০ হাজারে গিয়ে ঠেকে। মাল্টিন্যাশনাল বা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বেতন কাঠামো আরও আকাশছোঁয়া। কাজে দক্ষতা এবং একাগ্রতা থাকলে বড় প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যে কোনো সময় ডাক পেতে পারেন। সেসব প্রতিষ্ঠানে লাখের ওপর ধরা হবে আপনার বেতন। কাজের বিনিময়ে সেই সুযোগের প্রহর গুনতে পারেন।



সৃজনশীলতায় শান

ব্র্যান্ড এক্সিকিউটিভ হিসেবেই যদি আপনি ক্যারিয়ার গড়তে চান তবে নিজের ভেতরের সৃজনশীলতাকে উসকে দিন। কারণ এই পেশায় সৃজনশীলতা নামের অসাধারণ গুণটার বিকল্প নেই। প্রতিনিয়ত সৃজনশীল কাজে থেকে এই গুণটাকে আরও ঝালিয়ে নিতে পারেন। আপনি বাজারের দক্ষতার পাশাপাশি নিজের মেধা এবং সৃজনশীলতা দিয়ে আপনার কোম্পানির পণ্যের সর্বোচ্চ প্রচারণা চালাতে পারেন। শুধু তাই নয়, আপনার প্রচার কৌশল দিয়ে বাজার এবং নির্দিষ্ট কাস্টমারের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন।



প্রচারণা কৌশল

আপনি নিজের মেধা দিয়েই প্রচারণার কৌশল ঠিক করে নেবেন। অন্যদের মতো নির্দিষ্ট ট্র্যাকে থেকে প্রচারণা চালালে ভালোভাবে নাও এগোতে পারেন। এ ক্ষেত্রে পণ্য এবং এর কাস্টমারের কথা মাথায় রেখে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন যেমন দিতে পারেন, তেমনি টেলিভিশন, রেডিওর শরণাপন্নও হতে পারেন। এ ছাড়া অনলাইনের কথাটাও নিশ্চয়ই আপনার মাথায় কাজ করে। সেই ক্ষেত্রে আপনি ফেসবুক, টুইটার থেকে শুরু করে ব্লগের মাধ্যমেও এর প্রচারণা চালাতে পারেন। আপনি কোনো পদ্ধতিতে পণ্যের প্রচার করবেন এবং আপনার টার্গেট কাস্টমারের কাছে পৌঁছবেন, তা আপনাকেই ঠিক করতে হবে। পাশাপাশি তাদের মনস্তত্ত্বটাও মাথায় রাখবেন। সব ঠিকঠাক হলে নেমে পড়ূন কাজে।

সূত্র: সমকাল