News:

Skill.jobs Forum is an open platform (a board of discussions) where all sorts of knowledge-based news, topics, articles on Career, Job Industry, employment and Entrepreneurship skills enhancement related issues for all groups of individual/people such as learners, students, jobseekers, employers, recruiters, self-employed professionals and for business-forum/professional-associations.  It intents of empowering people with SKILLS for creating opportunities, which ultimately pursue the motto of Skill.jobs 'Be Skilled, Get Hired'

Acceptable and Appropriate topics would be posted by the Moderator of Skill.jobs Forum.

Main Menu

Internship-When, Where & How

Started by mim, April 02, 2019, 04:39:20 PM

Previous topic - Next topic

mim

ইন্টার্নি
কখন কোথায় কীভাবে!

ইন্টার্ন বা শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করে পুরোদস্তুর কর্মজীবনে প্রবেশের আগে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন শিক্ষার্থীরা। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি স্নাতকের সনদ পাওয়ার পূর্বশর্ত। কেন, কীভাবে, কোথায় ইন্টার্নি করব...এমন বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) সহকারী অধ্যাপক ও ব্যবসায় যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ সাইফ নোমান খান


একজন শিক্ষার্থী তাঁর শিক্ষাজীবন শেষে যখন পুরোদস্তুর কর্মজীবনে প্রবেশ করেন, সেই জীবনটা কেমন হবে, সে সম্পর্কে আগে থেকেই একটা ধারণা দেয় ইন্টার্নশিপ বা শিক্ষানবিশি। এটা শুধু যে কাজের অভিজ্ঞতা দেয় তা নয়, এটি শিক্ষার্থীর রিজ্যুমি বা সিভিকে পরবর্তীকালে চাকরিদাতার কাছে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য ও আকর্ষণীয় করে তোলে। যেকোনো প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করলেই কাজের বাজারে প্রবেশের জন্য একটা নেটওয়ার্ক তৈরির বড় সুযোগ হয়। তা ছাড়া এই অভিজ্ঞতা শৃঙ্খলা মেনে চলতে উৎসাহিত করে, শিক্ষাজীবন থেকেই ছেলেমেয়েদের আরও বেশি দায়িত্ববান হতে শেখায়।

কখন থেকে ইন্টার্নির জন্য প্রস্তুতি নেব?

স্নাতক পর্যায়ে পড়ালেখার সময়টাই ইন্টার্নি করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। অনেকে ইন্টার্নি করার জন্য স্নাতক শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। এত দিন অপেক্ষা না করে স্নাতকের বছর দুয়েক পর থেকেই ইন্টার্নি করার প্রস্তুতি নেওয়া উচিত বলে মনে করি। টার্ম ব্রেক বা বিভিন্ন ছুটিতে ছাত্রছাত্রীরা হরহামেশাই দু–এক মাসের বিরতি পেয়ে থাকেন। ছাত্রাবস্থায় পাওয়া এই দীর্ঘদিনের ছুটিগুলো ইন্টার্নি করার জন্য খুবই উপযুক্ত।

দেশের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে কতগুলো বিষয়ের পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবেই ইন্টার্নি বাধ্যতামূলক করা আছে। যে বিষয়গুলোতে বাধ্যতামূলক নয়, সেগুলোতে শিক্ষার্থীরা নিজের আগ্রহে করতে পারেন। মনে রাখতে হবে, আমি ইন্টার্নশিপ করব আমার নিজের উন্নতির জন্য। তাই ইন্টার্নি বাধ্যতামূলক থাকুক আর না থাকুক, নিজের আগ্রহ ও সময় বিবেচনায় সুযোগ পেলে ইন্টার্নি করা উচিত।

সিভিতে কী কী থাকলে ইন্টার্নি পাওয়া সহজ হয়?

প্রথমত অবশ্যই গুরুত্ব পাবে রেজাল্ট বা সিজিপিএ। একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, শিক্ষাজীবনে একজন শিক্ষার্থীর প্রধান দায়িত্ব হলো পড়াশোনা করা। আর সেই দায়িত্ব তিনি ভালোভাবে পালন করেছেন কি না, তার প্রতিফলন থাকে সিজিপিএতে। তাই আমি যখন কোনো শিক্ষার্থীকে ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেব, তখন সেই শিক্ষার্থী কতটুকু দায়িত্ববান, তা আমাকে বুঝতে সাহায্য করার একমাত্র নিয়ামক তাঁর সিজিপিএ।

আর দ্বিতীয়ত, সহশিক্ষামূলক কার্যক্রম। পড়ালেখার বাইরে একজন ছাত্র যদি বিতর্ক, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান...এমন নানা কিছুতে যুক্ত থাকেন, তা অবশ্যই নিয়োগদাতাদের নজর কাড়ে।

কোন প্রতিষ্ঠান আমার জন্য ভালো, সেটা কীভাবে বুঝব?

ইন্টার্নশিপের জন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানই আপনার জন্য ভালো হবে। ২–৩ ধরনের ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইন্টার্নি করে বৈচিত্র্যপূর্ণ অভিজ্ঞতা অর্জন করা উচিত। এতে করে দুটি লাভ হবে—এক, বিভিন্ন পেশার ও বিভিন্ন মানসিকতার মানুষের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা হবে। আর দুই, কোন কাজের ক্ষেত্রে আপনি কাজ করে স্বচ্ছন্দবোধ করছেন, সে সম্পর্কে আগে থেকেই একটা ধারণা হয়ে যাবে। এতে করে পড়াশোনা শেষে চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট একটা ক্ষেত্রের দিকেই আপনি মনোযোগ দিতে পারবেন।

আরেকটি বিষয় হলো, এমন প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নি খোঁজা উচিত, যেখানে একদম মাঠপর্যায়ে কাজ করার সুযোগ বেশি। কেননা মাঠপর্যায়ে কাজের অভিজ্ঞতা শিখতে অনেক বেশি সাহায্য করে।

প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করব?

চাকরি পাওয়া কঠিন, কিন্তু ইন্টার্নি পাওয়া অতটা কঠিন না। ইন্টার্নি পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সার্কুলার বা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আসতে হবে এমন কোনো কথা নেই। ইন্টার্নির জন্য পছন্দের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বা সিভি ফরোয়ার্ড করার ক্ষেত্রে নিচের উপায়গুলো অবলম্বন করতে পারেন:

ওয়াকিং সিভি: আপনি যে প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নি করতে চান, নিজে গিয়ে সেই প্রতিষ্ঠানে সিভি দিয়ে আসতে পারেন।

পরিচিত মানুষের মাধ্যমে: অনেকেরই অনেক পরিচিত মানুষজন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। তাঁদের মাধ্যমে আপনার সিভি পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন।

লিংকড ইন: লিংকড ইনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগে বা বিভাগে দায়িত্বরত কাউকে চাকরি না চেয়ে ইন্টার্নির অনুরোধ করে সিভি দেওয়া যেতে পারে।

ফ্যাক্টরি ভিজিটের সুযোগ: অনেক বিষয়ে কোর্সের পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে 'ফ্যাক্টরি ভিজিট' বা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখার সুযোগ হয়ে থাকে। এ ধরনের কোনো পরিদর্শনে গিয়ে তাঁদের কাছে ইন্টার্নি করার অনুরোধ করতে পারেন।

আর সবশেষে বলব, যত বেশি প্রতিষ্ঠানে সিভি দিতে পারা যায় ততই ভালো। আপনার ইন্টার্নি করার সুযোগ তত বাড়বে।

ইন্টার্নির সময়টা কীভাবে কাজে লাগাব?

ইন্টার্নি করার প্রধান উদ্দেশ্য হলো—শেখা। আর সেই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য মনে রাখবেন—

১. যত বেশি কাজ চেয়ে নেওয়া যায়, তত বেশি আপনার জন্য ভালো।

২. যত বেশি সময় দেওয়া যায়, আপনার শেখার পরিধি তত বেশি বাড়বে।

কাজের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চারপাশের মানুষের সঙ্গে সক্ষতা বাড়ানো বা নেটওয়ার্কিং করার চেষ্টাও করা উচিত। মনে রাখতে হবে, ইন্টার্নির এই স্বল্প সময়ে আমার কাজ করতে চাওয়ার আগ্রহ, নিজের ওপর অর্পিত কাজ বা দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন এবং নিজের আচার–ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে নিজের একটা সুনাম তৈরি করে আসার চেষ্টা করতে হবে, প্রতিষ্ঠান যেন আমার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠে, সেই চেষ্টা করতে হবে। যেন শিক্ষাজীবন শেষে সেই প্রতিষ্ঠানেই চাকরি পাওয়ার ভালো একটা সুযোগ তৈরি হয়।

রিপোর্ট লেখার সময় কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখব?

আপনি যখন কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে বা কোনো প্রকল্পে ইন্টার্নি করছেন, তখন সেই ইন্টার্নশিপ রিপোর্ট লেখার সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন থাকে, প্রয়োজনীয় বর্ণনা থাকে, যেটা আপনাকে অনুসরণ করতে হবে। আর সাধারণভাবে বলতে গেলে রিপোর্ট লেখার ক্ষেত্রে নিচের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি:

● যে প্রতিষ্ঠানে আপনি কাজ করছেন, সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে প্রয়োজনীয় ধারণা।

● যে কাজের জন্য আপনাকে ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল তার বিস্তারিত।

● নির্ধারিত কাজের বিপরীতে আপনি কী কী করেছেন এবং কীভাবে করেছেন?

● ইন্টার্নি করে আপনি কী কী শিখেছেন?

● আপনার কাজ প্রতিষ্ঠানটিতে কীভাবে অবদান রেখেছে?

একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, ইন্টার্নশিপ রিপোর্ট কিন্তু কোনো ধরনের গবেষণা প্রবন্ধ নয়। তাত্ত্বিক কথাবার্তার চেয়ে আপনার অর্জিত জ্ঞান বাস্তব এক কর্মক্ষেত্রে আপনি কীভাবে কাজে লাগিয়েছেন, তার প্রতিফলন থাকবে এই প্রতিবেদনে।


আমার সিজিপিএ/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি খুব ভালো না হয়...তাহলে কীভাবে ইন্টার্ন পাব?

এটা সঠিক, যাঁদের সিজিপিএ কম, ভালো রেজাল্টের অধিকারী শিক্ষার্থীদের চেয়ে তাঁদের ইন্টার্নি পাওয়া তুলনামূলক কঠিন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনি ইন্টার্নির সুযোগ পাবেন না। মনে রাখতে হবে, সিজিপিএ কম হওয়া মানেই সেই শিক্ষার্থীর জ্ঞানের পরিধি কম—বিষয়টা এমন না–ও হতে পারে। পরীক্ষায় কোনো কারণে খারাপ হলেও পরবর্তীকালে নিজে পড়ে শিক্ষার্থীরা শিখে নিতে পারেন। আর পড়াশোনায় সময় না দিলে আপনি কোনো না কোনো কাজে সময় ব্যয় করেছেন। সেই কাজটা কী এবং সেখানে আপনি কতটুকু শিখেছেন, সেখানে আপনার নৈপুণ্যের ছাপ আছে কি না, তাঁর প্রতিফলন আপনার সিভিতে দেখিয়ে নিয়োগদাতাকে সন্তুষ্ট করতে পারলে ইন্টার্নির সুযোগ আপনি পেতেই পারেন।

ইন্টার্নির ক্ষেত্রে পড়ার বিষয়ের সঙ্গে প্রতিষ্ঠান বা কাজের সামঞ্জস্য থাকা কতটা জরুরি?

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার উদ্দেশ্য এই নয় যে এখানে পড়ে আপনি যেকোনো একটি নির্ধারিত বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে বের হবেন। বরং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য হলো, একজন শিক্ষার্থীকে যতটা সম্ভব পেশাজীবী হিসেবে গড়ে তোলা, তাঁর মধ্যে 'বেসিক ইন্টেলিজেন্স' এবং 'অ্যানালিটিক্যাল থিংকিং'–এর ক্ষমতা গড়ে তোলা। চাকরির ক্ষেত্রেও সবাই যে বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে এসেছে, সে বিষয়েই কাজ করছে এমনটা নয়। গুগল কিংবা মাইক্রোসফটে প্রকৌশলীর বাইরেও কিন্তু অনেক কর্মজীবী আছেন। জে পি মরগ্যান কিংবা সিটিব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলোতে এমবিএ ছাড়াও অনেক পেশাজীবী কাজ করেন। স্টিভ জবস নিজে ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন না। জন হেনরি নিউম্যানের দ্য আইডিয়া অব এ ইউনিভার্সিটি বইতেও এই বিষয়টি অনেক ভালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

নিজের অ্যানালিটিক্যাল থিংকিং কতখানি শক্তিশালী, দ্রুত শিখে নেওয়ার ক্ষমতা কতটুকু, কঠোর পরিশ্রম করতে পারবেন কি না, নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষমতা কতটুকু—ইন্টার্নি বা চাকরি বলেন, যেকোনো ক্ষেত্রেই মৌলিক এই বিষয়গুলোই সব সময় প্রাধান্য পায় বা দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আমি তাই শিক্ষার্থীদের নিজেদের এই গুণগুলো বিকশিত করার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং চাকরির বাজারে দায়িত্বপ্রাপ্তদেরও এই বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ রাখতে অনুরোধ করব।

Source: Daily Prothom Alo