News:

Skill.jobs Forum is an open platform (a board of discussions) where all sorts of knowledge-based news, topics, articles on Career, Job Industry, employment and Entrepreneurship skills enhancement related issues for all groups of individual/people such as learners, students, jobseekers, employers, recruiters, self-employed professionals and for business-forum/professional-associations.  It intents of empowering people with SKILLS for creating opportunities, which ultimately pursue the motto of Skill.jobs 'Be Skilled, Get Hired'

Acceptable and Appropriate topics would be posted by the Moderator of Skill.jobs Forum.

Main Menu

নতুন বিষয়ে পড়ি

Started by Monirul Islam, July 31, 2018, 03:28:32 PM

Previous topic - Next topic

Monirul Islam

গত ১০–১৫ বছরে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চালু হয়েছে বেশ কিছু নতুন বিষয়। এগুলো নিয়ে নানা দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। কী পড়ানো হয়, এসব পড়ে কী লাভ, শুধু কি অন্য কোনো বিষয়ে সুযোগ না পেলেই ছাত্রছাত্রীরা এগুলো পড়েন, নাকি ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্য নিয়ে তাঁরা ভর্তি হন? প্রচলিত পড়ার বিষয়গুলোর বাইরে কয়েকটি সম্ভাবনাময় বিষয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই এই আয়োজন।

চিকিৎসা ও প্রকৌশলের যোগসূত্র

২০১৫ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) চান্স পাওয়ার পর একটু দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছিলাম। সেবারই প্রথম বুয়েটে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। ভাবছিলাম, প্রচলিত কোনো বিষয়ে স্নাতক করব নাকি নতুন একটা বিষয়ে পড়ব? কী পড়ানো হয়, পাস করব কি করব না, পাস করে ভবিষ্যতে কোথায় ক্যারিয়ার গড়ব—এমন নানা বিষয় নিয়ে মনে সংশয় কাজ করছিল। আবার বিষয়টাও আমার কাছে খুব আকর্ষণীয় মনে হয়েছে। চিকিৎসকদের যেমন প্রকৌশল নিয়ে খুব একটা জানা থাকে না, তেমনি প্রকৌশলীদের কাছেও মানবদেহের কলাকৌশলগুলো একটা রহস্য হয়ে থেকে যায়। এই সমন্বয়হীনতা দূর করার জন্যই বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং। বিষয়টি চিকিৎসক ও প্রকৌশলী—এই দুই ভিন্নধর্মী পেশাজীবীর মধ্যে একটা যোগসূত্র স্থাপন করেছে। প্রথম দিকে কাজটা বড় চ্যালেঞ্জ মনে হয়েছিল। কারণ, এখানে প্রকৌশলের জ্ঞানগুলো মানবদেহে প্রয়োগ করার জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বা সফটওয়্যারের ডিজাইন করতে হয়।

এরপর বিষয়টি নিয়ে আরও একটু ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখলাম, প্রচলিত প্রকৌশলের বিষয়গুলোতে যা পড়ানো হয় যেমন মেকানিকস, ইলেকট্রিসিটি বা ম্যাটেরিয়ালস—তার সবটাই বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আছে। তবে যেহেতু প্রয়োগটা করতে হবে মানুষের শরীরে, তাই এই বিষয়ে পড়তে হলে মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের মতোই এনাটমি, ফিজিওলজি...এসবও পড়তে হয়। এই ব্যাপারটিই আমার বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার আগ্রহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। আমাদের দেশে এটি নতুন হলেও দেশের বাইরে এই বিষয়টির চাহিদা অনেক। এই বিষয়ে প্রচুর গবেষণা হচ্ছে। আমাদের দেশেও গবেষণার সুযোগ আছে।

সব মিলিয়ে ভিন্ন কিছু করার স্বপ্ন নিয়েই বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বেছে নিয়েছিলাম। এরই মধ্যে আমরা কৃত্রিম হাত-পা, স্ট্যান্ট, গ্লুকোজ মনিটরিং প্যাঁচ বা পোর্টেবল ডায়ালাইসিস মেশিনের মতো জটিল বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি। যা স্বপ্নপূরণের সিঁড়িতে আমাকে একধাপ এগিয়ে দিয়েছে। আশা আছে, এভাবেই নিত্যনতুন কাজের মাধ্যমে আমাদের দেশেও বায়োমেডিকেলের একটি বড় সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে পারব।

নম্বর নয়, শেখাটাই বড়

ছোটবেলা থেকেই পরিবেশ, প্রকৃতির প্রতি আমার আগ্রহ আছে। ইচ্ছে ছিল এ-সংক্রান্ত কোনো বিষয় নিয়ে পড়ব। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বন ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগে পড়ার সুযোগও পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমার ঠিকানা হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি। নৌবাহিনীর সহায়তায় পরিচালিত এটি একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। শুরু থেকেই আমার মধ্যে কোনো দ্বিধা ছিল না। খুব আনন্দ নিয়ে নতুন এই বিষয়ে পড়েছি। যত দিন গেছে, বিষয়টার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা আরও বেড়েছে।

এখানকার পাঠ্যক্রম খুবই সাজানো-গোছানো। আর সমুদ্রবিজ্ঞান পড়তে হলে জাহাজে চড়তেই হবে। নৌবাহিনীর সহায়তায় আমাদের পড়ালেখা, তথ্য সংগ্রহ ও গবেষণার কাজটা আরও সহজ হয়ে যায়। গত বছর ডিসেম্বর মাসে আমার সমুদ্রভ্রমণের সুযোগ হয়েছিল। বিএনএস শৈবাল জাহাজে চড়ে সমুদ্রে সময় কাটিয়েছি প্রায় ছয় ঘণ্টা। সে এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। সমুদ্রে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের কাজ আমরা হাতে-কলমে শিখেছি।

কাজের সুযোগ নিয়ে এখনই ভাবছি না। এখানে ভর্তি হওয়ার পর আমার মধ্যে একটা পরিবর্তন এসেছে। স্কুল-কলেজে আমরা পড়তাম ভালো নম্বরের জন্য। কিন্তু সমুদ্রবিজ্ঞানে পড়ে বুঝেছি, কী শিখছি সেটাই বড়। তাই এখন শেখার ওপরই বেশি জোর দিচ্ছি। নৌবাহিনী, গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়াও আরও নানা ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ আছে। যেহেতু বিষয়টি এখনো নতুন, দেশে এই বিষয়ের শিক্ষক প্রয়োজন। তাই শিক্ষকতায়ও যুক্ত হতে পারি।

পর্যটন খাতে সম্ভাবনা

ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগটি নতুন নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এর যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৭ সালে। তবে এই বিভাগে ভর্তির আগে অনেক শিক্ষার্থীর মধ্যে খানিকটা দ্বিধা কাজ করে। আমার ভর্তি সেশন ছিল ২০১৪-১৫। অনেকের মতো আমিও ভেবেছিলাম, বিষয় পরিবর্তন করব। কিন্তু ক্লাস শুরু করার কয়েক দিন পর একজন ম্যাডাম অ্যাসাইনমেন্ট দিলেন—সিলেটে পর্যটনের সম্ভাবনা এবং এ বিষয়ে করণীয় কী, এর ওপর একটা রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। কাজটা করতে গিয়ে মজা পেয়ে গেলাম। হয়তো এই একটি অ্যাসাইনমেন্টের জন্যই থেকে গিয়েছিলাম ট্যুরিজম!

মাঝে অনেকবার হতাশা কাজ করেছে। ভেবেছি, হয়তো সবার কথা শুনে অন্য বিভাগে গেলেই ভালো হতো। কিন্তু তৃতীয় বর্ষে পড়ার সময় যখন বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র নিয়ে কাজ শুরু হলো, তখন বিষয়টা আরও ভালোবেসে ফেললাম। কক্সবাজার, কুয়াকাটা, বান্দরবানসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রের প্রচারণার জন্য কৌশলগত পরিকল্পনা উপস্থাপন করি আমরা। পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে, দর্শনার্থী, ট্যুরিস্ট পুলিশ কিংবা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিকল্পনা দাঁড় করানোর কাজটা কঠিন, তবে রোমাঞ্চকরও বটে।

আরও মজার ও চ্যালেঞ্জিং কাজের দেখা পেলাম চতুর্থ বর্ষের শুরুতে। এমন সব দর্শনীয় জায়গা আমাদের খুঁজে বের করে 'ব্র্যান্ডিং' করতে বলা হলো, যেগুলো যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এখনো সেভাবে প্রচার পায়নি। আমরা বেছে নিয়েছিলাম ঢাকার অদূরে বিক্রমপুরে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর জন্মস্থান।

এই বিভাগের তত্ত্বাবধানে গত বছর আয়োজিত হয় 'আন্তর্জাতিক পর্যটন সম্মেলন'। সম্মেলনে নানা দেশের পর্যটন বিশেষজ্ঞরা এসেছিলেন। প্যাসিফিক এশিয়া ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনের (পাটা) সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র স্টুডেন্ট চ্যাপটার। আমি কাজ করছি করপোরেট অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে। সংগঠনের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন করি। পাটার সঙ্গে যুক্ত ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সভা-সেমিনারে যাওয়ার এবং ভিনদেশে ইন্টার্নি করারও সুযোগ পায়।

চাকরির বাজারে আমাদের বিভাগটার এখন বেশ চাহিদা। দেশ-বিদেশের বিশ্বখ্যাত হোটেল চেইন, অ্যাভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি, রিসোর্টগুলো ছাড়াও সরকারি পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ আছে। এ ছাড়া উদ্যোক্তা হয়েও আমরা বদলে দিতে পারি দেশের পর্যটনের চিত্র!

Source: The Prominent