News:

Skill.jobs Forum is an open platform (a board of discussions) where all sorts of knowledge-based news, topics, articles on Career, Job Industry, employment and Entrepreneurship skills enhancement related issues for all groups of individual/people such as learners, students, jobseekers, employers, recruiters, self-employed professionals and for business-forum/professional-associations.  It intents of empowering people with SKILLS for creating opportunities, which ultimately pursue the motto of Skill.jobs 'Be Skilled, Get Hired'

Acceptable and Appropriate topics would be posted by the Moderator of Skill.jobs Forum.

Main Menu

চালক ছাড়াই চলবে গাড়ি

Started by Noor E Alam, July 30, 2018, 10:43:37 AM

Previous topic - Next topic

Noor E Alam


মাত্র এক দশক পর, ২০২৮ সালে ২০ নভেম্বরের কথা কল্পনা করুন তো! রাস্তায় হাঁটছেন, পাশ দিয়ে শাঁ করে গাড়ি চলে গেল, কিন্তু চালক নেই। আশপাশে ব্যক্তিগত গাড়ি কমে গেছে। ট্রাফিক জ্যাম নেই! এক মা তাঁর স্মার্টফোন থেকে গাড়ি ডেকে সন্তানকে চালকবিহীন গাড়িতে তুলে দিচ্ছেন। ওই গাড়ি স্বয়ংক্রিয়ভাবে শিশুকে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছে!

এখন পর্যন্ত এসব শুধু কল্পনার বিষয় মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে স্বয়ংক্রিয় চালকবিহীন গাড়ি বা রোবো-ট্যাক্সি তৈরির কাজ কিন্তু শুরু হয়ে গেছে। ব্যবসা পরিকল্পনার মডেলগুলো ঠিকঠাক হয়ে গেলে কিছু দিন পরই রাস্তায় চালকবিহীন গাড়ি দেখা যাবে। চালকবিহীন বিভিন্ন গাড়ি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এএফপি ও রয়টার্সের বিশ্লেষণে তুলে ধরা হয়েছে গাড়ির ভবিষ্যৎ। এতে বলা হয়েছে, চালবিহীন গাড়ি আগামী দিনে কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে।

প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা বলছেন, রোবো-ট্যাক্সির বিপ্লব ঘটতে যাচ্ছে। গাড়ি নির্মাতা সব বড় বড় ব্র্যান্ড স্বয়ংক্রিয় বৈদ্যুতিক গাড়ি, ট্র্যাক তৈরিতে প্রতিযোগিতা শুরু করেছে। এসব গাড়ি স্মার্টফোনের কয়েকটি স্পর্শেই হাতের নাগালে চলে আসবে।

বাজার গবেষকেরা বলছেন, ২০২৫ সাল নাগাদ বৈশ্বিক গাড়ির বাজারের ১২ শতাংশ দখল করবে পুরোপুরি বৈদ্যুতিক গাড়ি। ২০৩০ সাল নাগাদ তা ৩৪ শতাংশে পৌঁছাবে। গত মাসে ব্যাংক অব আমেরিকার কর্মকর্তা মেরিল লিঞ্চ বৈদ্যুতিক গাড়ি সম্পর্কে এক পূর্বাভাস দেন। তিনি বলেন, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের ৯০ শতাংশ গাড়ি হবে বৈদ্যুতিক।

এর উদ্দেশ্য পরিষ্কার। বিশ্বজুড়ে বড় বড় শহরগুলোতে ধোঁয়াশা বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দ্রুত বর্ধনশীল বাজারে পরিবেশবান্ধব গাড়ি নামাতে চাইছে চীন। এ ছাড়া বিভিন্ন শহরে ট্রাফিক জ্যামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট হচ্ছে। অনেক শহরে তাই গাড়ির জন্য কোনো অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। গাড়িনির্মাতাদেরও এখন নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরি হয়েছে। বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গাড়ির বাজারে তাদের আগ্রহ দেখিয়েছে। অ্যাপল, গুগল, টেসলা স্বয়ংক্রিয় গাড়ি তৈরিতে কাজ শুরু করেছে। টেসলার প্রধান নির্বাহী এলন মাস্ক সম্প্রতি সেমি-ট্রাক তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর ভাষ্য, এ ধরনের ট্রাক প্রকৌশলের পাশাপাশি সফটওয়্যারের ওপর নির্ভর করবে এবং দ্রুত বাজারে আধিপত্য দেখাবে।

গাড়ি শিল্পের হর্তাকর্তারাও বসে নেই। ফ্রান্সের পিএসএ গাড়ি শেয়ারিং ও অন্যান্য সেবা দিতে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে। গাড়ি শেয়ারিংয়ে ফ্রিটুমুভ সেবা দিতে কাজ করবে প্রতিষ্ঠানটি। জার্মানির ডেইমলার কর্তৃপক্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বোসের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয় বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরিতে কাজ শুরু করেছে। ২০২০ সালের মধ্যে ওই গাড়ি বাজারে আনতে চায় তারা। এ ছাড়া বিশ্বের ২৪টি শহরে কারটুগো নামের গাড়ি শেয়ারের সেবা চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

জার্মানির ভক্সওয়াগেনের পক্ষ থেকে মোইয়া নামের একটি বিশেষ বিভাগ চালু করা হয়েছে যা ইলেকট্রনিক গাড়ি, গাড়ি ভাড়ার মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করবে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ম্যাথিয়াস মুইলার জানান, ভবিষ্যতে সবার কাছে হয়তো গাড়ি থাকবে না। মোইয়ার মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করছি যাতে সবাই আমাদের গ্রাহক হতে পারে।

চালকবিহীন গাড়ি নিয়ে চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ছবি: গুগল।
চালকবিহীন গাড়ি নিয়ে চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ছবি: গুগল।
জার্মানির পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রোনাল্ড বার্জারের তথ্য অনুযায়ী, ২০৩০ সাল নাগাদ অটোমোবাইল শিল্পের মোট মুনাফার ৪০ শতাংশ আসবে রোবো-ট্যাক্সি বা স্বয়ংক্রিয় গাড়ি থেকে। ওই সময়ের মধ্যে প্রাইভেট বা ব্যক্তিগত গাড়ির চাহিদা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে।

অটোমোবাইল খাতের বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, যে গাড়িনির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্বয়ংক্রিয় গাড়ি ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারবে না তারা টিকে থাকতে ব্যর্থ হবে।

ভক্সওয়াগেন তাদের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানিয়েছে, অটোমোবাইল শিল্পকে নতুন করে সাজাতে তারা আগামী পাঁচ বছরে হাইব্রিড ও বৈদ্যুতিক গাড়িতে চার হাজার কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে।

অবশ্য গাড়ি নির্মাতাদের বড় সমস্যা হচ্ছে আশানুরূপ 'শূন্য নির্গমন' বা পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব গাড়ি বিক্রি না হওয়া। ২০১২ সাল থেকে বাজারে আসা রেনাল্টের জো রেঞ্চের গাড়ি বিক্রি হয়েছে মাত্র এক শতাংশ। রেনাল্টের প্রধান কার্লোস গোশান বলেন, ২০২২ সাল নাগাদ পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব গাড়ি বিক্রি ৫ শতাংশে পৌঁছাবে।

গাড়ি নির্মাতাদের আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে উৎপাদন খরচ। পরবর্তী প্রজন্মের বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরিতে প্রচলিত মডেলগুলোর চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি খরচ হবে। ফলে বিনিয়োগের তুলনায় মুনাফা করতে বড় সমস্যায় পড়বে গাড়ি নির্মাতারা। গত সেপ্টেম্বরে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট অটো শোতে পিএসএর প্রধান নির্বাহী কার্লোস তাভারেজ বলেন, সব গাড়ি নির্মাতাদের বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির দিকে দ্রুত এগোতে হবে।

তবে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির দিক থেকে এশিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন পশ্চিমা গাড়িনির্মাতারা। বিশেষ করে চীনের গাড়ি নির্মাতা বৈদ্যুতিক গাড়ি ও ব্যাটারি তৈরিতে অনেকটাই এগিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি বুঝতে পেরেই ইউরোপিয়ান কমিশনকে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি তৈরিতে জোর দেওয়ার কথা বলতে হচ্ছে।

Source:- Prothom Alo