News:

Skill.jobs Forum is an open platform (a board of discussions) where all sorts of knowledge-based news, topics, articles on Career, Job Industry, employment and Entrepreneurship skills enhancement related issues for all groups of individual/people such as learners, students, jobseekers, employers, recruiters, self-employed professionals and for business-forum/professional-associations.  It intents of empowering people with SKILLS for creating opportunities, which ultimately pursue the motto of Skill.jobs 'Be Skilled, Get Hired'

Acceptable and Appropriate topics would be posted by the Moderator of Skill.jobs Forum.

Main Menu

ফেসবুক ব্যবহারকারীদের আস্থা কমছে

Started by Noor E Alam, July 30, 2018, 10:18:01 AM

Previous topic - Next topic

Noor E Alam


কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ফেসবুক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তরুণেরা। ঝুঁকে পড়ছেন আরও নতুন কোনো সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্মে। তরুণদের পাশাপাশি অন্যরাও ফেসবুকের ওপর আস্থা হারাচ্ছেন। প্রাইভেসি নিয়ে উদ্বেগে অনেকেই ফেসবুক ছেড়ে দিচ্ছেন। ফেসবুক ব্যবহারকারী বাড়ার যে গতি ছিল, তা কমে এসেছে। সম্প্রতি ফেসবুক তাদের প্রান্তিক আয় ঘোষণার সময় জানিয়েছে, ফেসবুক ব্যবহারকারী বৃদ্ধি পাওয়া কমে এসেছে। বিশ্লেষকেরা যে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।

এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জুন মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত হিসাব ধরলে ফেসবুকের মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী ২২৩ কোটি, যা গত বছরের জুনের চেয়ে ১১ শতাংশ বেশি। অথচ বাজার বিশ্লেষকেরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, ফেসবুক ব্যবহারকারী ২২৫ কোটি ছুঁয়ে যাবে। ফেসবুক সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্টসেট এ তথ্য প্রকাশ করেছে। ফ্যাক্টসেটের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে মাসিক ও দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর হিসাব ধরলে ফেসবুক ব্যবহারকারী বাড়েনি। ইউরোপেও ফেসবুকের প্রবৃদ্ধির হার কম।

ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রায় ২৫০ কোটি মানুষ প্রতি মাসে সক্রিয়ভাবে তাদের অ্যাপগুলো ব্যবহার করছেন। তবে শুধু ফেসবুকে দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারী গত বছরের চেয়ে ১১ শতাংশ বেড়েছে। ওয়াল স্ট্রিট যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, এটি তার চেয়ে কম। ইউরোপে দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারী গত প্রান্তিকের চেয়ে ২ কোটি ৮২ লাখ কমেছে।

তাহলে কি ফেসবুক আকর্ষণ হারাচ্ছে?

তথ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান ই-মার্কেটারের তথ্য অনুযায়ী, তরুণেরা আর ফেসবুকে কোনো আকর্ষণ খুঁজে পাচ্ছেন না। ফেসবুক ও ফেসবুকের মালিকানাধীন ইনস্টাগ্রামের তুলনায় স্ন্যাপচ্যাট বেশি টানছে তরুণদের।

গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে এ বছর ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের ফেসবুক ব্যবহার ৫ দশমিক ৮ শতাংশ কমবে। ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রেও ফেসবুক ব্যবহার কমতে দেখা যাবে। ২০১৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকবে। সব মিলিয়ে ২৫ বছরের কম বয়সী ২০ লাখ ব্যবহারকারী হারাবে ফেসবুক। এতে সুবিধা হবে স্ন্যাপচ্যাট ও ইনস্টাগ্রামের। ২০১৮ সালে স্ন্যাপচ্যাটে ১৯ লাখ ব্যবহারকারী বাড়বে। ইনস্টাগ্রামে বাড়বে ১৬ লাখ।

গত বছরের নভেম্বরে নিয়েলসেনের তথ্য বিশ্লেষণ করেছে সফটওয়্যার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান পিভোটাল। ওই তথ্য অনুযায়ী, ফেসবুকে মোট কাটানো সময়ের ৪ শতাংশ কমে গেছে। ডিসেম্বর মাসে ফেসবুকের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। ওই সময় ফেসবুকের মূল প্ল্যাটফর্মে মোট কাটানো সময়ের ১৮ শতাংশ কমতে দেখা গেছে। এটি আগের মাসের চেয়ে ব্যাপক পরিবর্তন। পিভোটালের তথ্য অনুযায়ী, প্রত্যেক ব্যক্তির ফেসবুকে সময় দেওয়ার হার ২৪ শতাংশ কমে গেছে। ফেসবুকের মতো ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীরা সক্রিয়তা কমিয়েছেন। প্রত্যেক ব্যক্তির ইনস্টাগ্রামে সময় কাটানোর হার ৯ শতাংশ কমেছে।

সব মিলিয়ে এটি ফেসবুকের জন্য বিশাল এক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফেসবুকে একদিকে মানুষ সময় যেমন কম দিচ্ছে, তেমনি এতে লাইক, কমেন্ট করছে কম। এর কারণ হতে পারে ফেসবুকের সাম্প্রতিক অ্যালগরিদম পরিবর্তন। নিউজফিডে পরিবর্তন এনেছে ফেসবুক। এতে খবর দেখানোর বদলে বেশি করে বন্ধু ও পরিবারের পোস্ট দেখানো হচ্ছে। অবশ্য ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ এ ধরনের পরিবর্তনের কথা মেনে নিতে বলেছিলেন। ফেসবুকের প্রতি মানুষ যে আকর্ষণ হারাচ্ছে, এ সংখ্যাগুলো তারই প্রমাণ।

ফেসবুক ব্যবহারকারী কি আস্থার সংকটে ভুগছেন? যুক্তরাজ্যের নির্বাচনী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ফেসবুক থেকে তথ্য নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে কাজে লাগিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই তথ্য জানাজানি হওয়ার পর অনেকেই ফেসবুকের ওপর বিরক্ত হন। প্রাইভেসি নিয়ে শঙ্কায় পড়েন। ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হওয়ার অভিযোগ ওঠার পর ওয়ালস্ট্রিটে নড়বড়ে হয়ে যায় ফেসবুকের অবস্থান। বিশ্লেষকেরা বলছেন, অস্তিত্বের সংকটে পড়ে ফেসবুক। এতে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটির ওপর ব্যবহারকারীদের আস্থা কমে। তবে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে উঠে ফেসবুক। কিন্তু কিছুটা প্রভাব পড়ার বিষয়টি উঠে এসেছে ফেসবুকের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আয় ঘোষণার সময়।

২৫ জুলাই দ্বিতীয় প্রান্তিকের আয় ঘোষণা করে ফেসবুক। সিএনবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, তথ্য ফাঁস ও ভুয়া খবর কেলেঙ্কারির জেরে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি ফেসবুক। বিশ্লেষকেরা দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর যে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, তাও ছুঁতে পারেনি তারা। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় শেয়ারের দামে ধস নামে। বড় ধাক্কা লাগে ফেসবুকের বিজ্ঞাপন থেকে আসা আয়ের ক্ষেত্রে। ব্যবহারকারীর আস্থা তৈরি করতে না পারলে ফেসবুকের ঘুরে দাঁড়ানো কষ্টকর হবে। বিশ্লেষকেরা ফেসবুকের ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে আশাবাদী। অনেকেই ফেসবুকের বর্তমান হালকে ইউরোপে জেনারেল ডেটা প্রোটেকশন রেগুলেশন বা জিডিপিআরের সাময়িক নেতিবাচক প্রভাব বলে মনে করছেন।

ফেসবুকের জন্য আরেকটি হতাশার খবর হতে পারে তথ্য কেলেঙ্কারি নিয়ে বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদদের বর্তমান অবস্থান। ফেসবুকের মতো সাইটগুলোর ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম দাঁড় করিয়ে আইনের বেড়াজালে আটকাতে চান তাঁরা। অনেক দেশে কর আরোপের কথাও ভাবা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সোচ্চার যুক্তরাজ্য। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেসবুকের কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির সূত্র ধরে অসত্য তথ্য ও ভুয়া খবর বিষয়ে তদন্ত করছে যুক্তরাজ্যের দ্য ডিজিটাল, কালচার, মিডিয়া অ্যান্ড স্পোর্ট (ডিসিএমএস) কমিটি। তাদের প্রথম প্রতিবেদন আজ রোববার প্রকাশিত হবে। সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে শক্ত নিয়মকানুনের আওতায় আনার প্রস্তাব দেবে ওই কমিটি। তাদের প্রস্তাবের মধ্যে নির্বাচন হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি নিয়ম ভঙ্গ করলে বাড়তি জরিমানার কথাও বলা হয়েছে।

ফেসবুকের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ বসানো হলে আর ব্যবহারকারী আকর্ষণ হারালে ফেসবুকের হাতে থাকবে কী?

Source:-Prothom Alo