News:

Skill.jobs Forum is an open platform (a board of discussions) where all sorts of knowledge-based news, topics, articles on Career, Job Industry, employment and Entrepreneurship skills enhancement related issues for all groups of individual/people such as learners, students, jobseekers, employers, recruiters, self-employed professionals and for business-forum/professional-associations.  It intents of empowering people with SKILLS for creating opportunities, which ultimately pursue the motto of Skill.jobs 'Be Skilled, Get Hired'

Acceptable and Appropriate topics would be posted by the Moderator of Skill.jobs Forum.

Main Menu

বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগে রেখে বেড়েই চলেছে প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো

Started by Noor E Alam, May 21, 2018, 02:18:41 PM

Previous topic - Next topic

Noor E Alam

গুগল, ফেসবুক, আমাজনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো কত বড় ভাবুন তো? ২০১৭ সালে গুগলে কর্মীসংখ্যা ছিল ৭৩ হাজার ৯৯২ আর ফেসবুকে ২৫ হাজার ১০৫ জন। কর্মীসংখ্যা দেখেই ধারণা করা যায় প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা বড়। প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো কিন্তু কলেবরে আরও বেড়েই চলছে। এই বেড়ে চলার পথে তারা হয়ে উঠছে অপ্রতিরোধ্য। তাদের নিয়ন্ত্রণের প্রশ্ন উঠছে, যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। তাই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তুলনা করা হচ্ছে স্লেজ টানা কুকুরের সঙ্গে।

কুকুরে টানা স্লেজ গাড়ির কথা একবার কল্পনা করুন! বরফের দেশে বাস করা এস্কিমো অন্যতম বাহন হচ্ছে স্লেজ গাড়ি। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের গলায় দড়ি জুড়ে দিয়ে সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করেন যাত্রী। ঘোড়ার গাড়ির মতো বরফের মধ্যে ছুটে চলে সেই গাড়ি। ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বেশ কয়েক বছর ধরে ফেসবুক, আমাজন, নেটফ্লিক্স আর গুগলের হয়েছে স্লেজ গাড়ির ওই কুকুরের দশা। কুকুর যেভাবে অপরিসীম শক্তিতে গাড়িকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়, এখনকার বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও শেয়ারবাজারকে সেভাবেই টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

গুগল-ফেসবুকের এ যাত্রাপথে খুব বেশি বাধা আসেনি। তারা ধীরে ধীরে বড় হতে হতে এখন দানব হয়ে গেছে। গুগল ফেসবুকের মতোই বড় হয়েছে আমাজন আর নেটফ্লিক্স। সিলিকন ভ্যালির ওই বড় চারটি প্রতিষ্ঠান এখন 'এফএএনজি' বা 'ফ্যাংগ' নামেই পরিচিত হয়ে উঠেছে। কী এই ফ্যাংগ? এটি মূলত চারটি প্রতিষ্ঠানের নামের সংক্ষিপ্ত রূপ। তারা স্বতন্ত্রভাবে এখন বিশাল সম্পদশালী প্রতিষ্ঠান। বিশ্বজুড়ে পরিচিত। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই ফ্যাংগের প্রভাবে ২০১৬ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার 'এসঅ্যান্ডপি ৫০০'–এর ২০ শতাংশ শেয়ার বেড়েছে। অর্থাৎ ফ্যাংগদের ভাগ্যই নির্ভর করছে শেয়ারের দামের ওঠা–নামা। কিন্তু এখন ফ্যাংগদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে নতুন এক সমস্যার। ইকোনমিস্ট তাদের 'ডিফ্যাংগড' শীর্ষক প্রতিবেদনে বলছে, ফ্যাংগসের ভাগ্যেও এখন ভাগ বসানো যায়।

এ বছরেরই ২৩ এপ্রিলের কথাই ধরা যাক। গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট তাদের আয়ের ঘোষণা দেয় ওই দিন। অ্যালফাবেট জানায়, গত চার বছরের মধ্যে এ বছর তাদের আয়ের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। ইতিবাচক এ ঘোষণায় শেয়ারের দাম বাড়ার পরিবর্তে পরের দিনই তাদের শেয়ারের দাম সাড়ে ৪ শতাংশ কমে গেল। কারণ? গুগল জানাল, আয় বাড়লেও নতুন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্য তাদের ব্যয়ও বেড়েছে। ক্লাউড কম্পিউটিং ও হার্ডওয়্যার ব্যবসার মতো নতুন ব্যবসায় তারা বিনিয়োগ করছে।

উল্টো ঘটনা ঘটল ২৫ এপ্রিল। বিজ্ঞাপনী আয় বাড়ার ও ব্যাপক লাভের ঘোষণা দিল ফেসবুক। একই সঙ্গে গত বছরের তুলনায় ৩৯ শতাংশ ব্যয় বাড়ার ঘোষণা দিল। এর বাইরে ফেসবুক ও কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ডেটা কেলেঙ্কারির প্রভাবের বিষয়টিও যুক্ত ছিল। আশঙ্কা ছিল, ফেসবুকের ওই কেলেঙ্কারির ঘটনার প্রভাব পড়বে। বিনিয়োগকারীরা দুশ্চিন্তাতেই ছিলেন। কিন্তু জাকারবার্গ জানালেন, ডেটা কেলেঙ্কারির প্রভাব সামান্যই। ফলে শেয়ারের দাম কয়েক ঘণ্টায় ৭ শতাংশ বেড়ে গেল।

গুগল ফেসবুকের মতো অবস্থা অবশ্য আমাজন আর নেটফ্লিক্স নেই। চলতি বছরে নেটফ্লিক্স সবচেয়ে ভালো ফলাফল দেখিয়েছে। বিনিয়োগকারীরা আস্থা রেখেছেন।

ইকোনমিস্ট বলছে, প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতরে এই পরিবর্তন এর আগে বিনিয়োগকারীদের এতটা ভাবায়নি। তারা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন পরিবর্তনকে অগ্রাহ্য করেছেন। কিন্তু এখন? এই ফ্যাংগের সামান্য পার্থক্যগুলোতেও তাদের এখন মনোযোগ দিতে হচ্ছে। তাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে।

প্রযুক্তি দুনিয়ার বড় চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অনেক মিল যেমন খুঁজে পাওয়া যাবে, তেমনি তাদের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্যও চোখে পড়বে। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানগুলোর আধিপত্য বিস্তার, ব্যাপ্তি ও বেড়ে চলার হারে এ পার্থক্য দৃশ্যমান। আদতে তারা, স্লেজ গাড়ির মাথায় থাকা সারমেয়টির মতোই বিনিয়োগকারীদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে ফেসবুক, ই-কমার্সে আমাজন, ভিডিও স্ট্রিমিংয়ে নেটফ্লিক্স আর সার্চে গুগল বেড়েই চলেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ নিজ ক্ষেত্রে আরও আধিপত্য বিস্তার করতে নতুন অ্যালগরিদম আর নেটওয়ার্ক প্রভাব কাজে লাগাচ্ছে। এতে দ্রুত তাদের ব্যবহারকারী বাড়ছে আর সে অভিজ্ঞতা খাটিয়ে সেবার মান উন্নত করছে। ফলে আরও গ্রাহক আকর্ষণ করছে। এ চার প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করছে তাদের বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে।

এ বেড়ে চলার রহস্য কী, তাই ভাবছেন? উত্তরটা সহজ। ব্যাপক বাজার সম্ভাবনা। ফেসবুক আর গুগল ইতিমধ্যে দানব হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে অনলাইন বিজ্ঞাপনের বাজারের কথাই ধরুন। অনলাইন বিজ্ঞাপন থেকে সিংহভাগ আয় করছে তারা। ভবিষ্যতে অনলাইনে বিজ্ঞাপন আরও বাড়বে। তাদের বৃদ্ধি কি আর থেমে থাকবে? অন্যদিকে, যদি গ্রাহক পণ্যের বাজার দেখা যায়, তবে আমাজনের সম্পদ এখন ৪ দশমিক ৮ ট্রিলিয়নে দাঁড়িয়েছ। ২০১৫ সালের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে আমাজনের কনজুমার মার্কেট। এসব তথ্য জানিয়েছেন মর্গান স্ট্যানলির বাজার বিশ্লেষক ব্রায়ান নোয়াক। তিনি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা অনলাইনে পণ্য কেনা বাড়াচ্ছেন। তাতে লাভবান হবে আমাজন। আবার যদি নেটফ্লিক্সের কথা ধরা যায়, তাতেও প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপক সম্ভাবনার চিত্র সামনে আসে। ২০২২ সাল নাগাদ ১২ কোটি ব্যবহারকারী প্রায় দ্বিগুণ হবে নেটফ্লিক্সের। এ থেকে বলা যায়, ভবিষ্যতে যদি সেবার দাম বাড়ায় তাতেও তাদের কোনো গ্রাহক কমবে না।

আয়ের সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ফ্যাংগদের মিল থাকলেও তাদের আয়ের পদ্ধতিতে পার্থক্য দেখা যায়। নেটফ্লিক্স ও আমাজন ১০ কোটি করে 'প্রাইম মেম্বার' ঘোষণা দিয়েছে। অনলাইন ভিডিও ও বিনা খরচে ঘরে বসে পণ্য পেতে বার্ষিক ফি দেয় প্রাইম সেবার গ্রাহকেরা। এ ছাড়া আমাজন ক্রেতাদের পছন্দের পণ্য বিক্রি করে। তাদের ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবস্থা থেকেও নিশ্চিত আয় আসে। গুগল আর ফেসবুক ডিজিটাল বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে অর্থ কামায়। ব্যবহারকারীর মনোযোগ কাড়ার বিষয়টি তুলে ধরে বিজ্ঞাপনদাতাদের আকর্ষণ করে।

তবে গত মার্চে ফেসবুকের ডাটা কেলেঙ্কারির ঘটনার পরে রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়ে প্রতিষ্ঠানগুলো। যেসব প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপননির্ভর নয়, তারা নিজেদের আলাদা জাত হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করে। বিশেষ করে গুগল, ফেসবুক থেকে নিজেদের পৃথক বলে তুলে ধরে তারা। নেটফ্লিক্সের প্রধান রিড হ্যাস্টিং বিশ্লেষকেদের বলেন, নেটফ্লিক্স নিখাদ কোনো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নয় বরং একে মিডিয়া প্রতিষ্ঠান বলা যেতে পারে। প্রাইভেসিকে গুরুত্ব দেয় নেটফ্লিক্স। বিজ্ঞাপন বিক্রির মডেলের সঙ্গে তারা নেই।

ফ্যাংগের পঞ্চম সদস্য বলে মনে করা হয় মার্কিন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান অ্যাপলকে। তারাও এ সুযোগে নিজেদের আলাদা বলে দাবি করে। অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক সরাসরি ফেসবুকের তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং বিজ্ঞাপন ব্যবসা মডেলের সমালোচনা করেন।

ফ্যাংগের মধ্যে অনেক মিলের সঙ্গে চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্রেও কিছুটা মিল পাওয়া যায়। তবে একেক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এর মাত্রা ভিন্ন হতে পারে। প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নিয়ন্ত্রণের চাপ। গুগল ও ফেসবুকের ক্ষেত্রে এ চ্যালেঞ্জ সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে ইউরোপের রাজনীতিবিদেরা কতটুকু চাপ দিতে পারবে তা শিগগিরই দেখা যাবে। ইউরোপে গুগল-ফেসবুকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চিন্তায় আছেন বিনিয়োগকারীরা। বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রাইভেসির ক্ষেত্রে নতুন করে কোনো কেলেঙ্কারির ঘটনায় নিয়ন্ত্রকেরা কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে, যা ডিজিটাল খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ভালো হবে না। একচেটিয়া ব্যবসা নিয়ে অ্যান্টিট্রাস্টের সামনে পড়তে হতে পারে আমাজন ও নেটফ্লিক্সকেও। এর বাইরে রাজনীতিবিদদের প্রভাবও আছে। তাদের কথাবার্তা প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের দামে প্রভাব ফেলে। সম্প্রতি আমাজনকে নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টুইটের পর শেয়ারের দাম পড়ে যায় প্রতিষ্ঠানটির।

বিশ্লেষকেদের মতে, প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে লাভের সীমা। তৃতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রতিযোগিতা। প্রযুক্তিক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে বলেই ধারণা করা যায়। কারণ, নিজস্ব বাজার বাড়াতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানকে অধিগ্রহণ করার মতো ঘটনা ঘটছে। প্রতিষ্ঠানগুলো একে অন্যের সীমানায় হানা দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকিতে নেটফ্লিক্স। কারণ, ডিজনি সাবসক্রিপশনভিত্তিক সেবা আনার জন্য নেটফ্লিক্স থেকে দূরে সরে গেছে। আমাজন নিজস্ব ভিডিও স্ট্রিমিং সেবা দিচ্ছে এবং বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। এতে নেটফ্লিক্সের শেয়ারের দাম পড়ে যেতে পারে বলেই মনে করেন আরবিএস ক্যাপিটালের বিশ্লেষক মার্ক মাহানে। ডিজিটাল বিজ্ঞাপন ক্ষেত্রেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়বে। ডিজিটাল বিজ্ঞাপন ব্যবসা শুরু করছে আমাজন, যা আগামী পাঁচ বছরে ২ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ছুঁতে পারে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ফ্যাংগের মধ্যে ফেসবুক-গুগলের বিপদ কম। বিপদে পড়ে যেতে পারে অফলাইনের মিডিয়াগুলো। কিন্তু তাদের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা তাদেরই লাভ কমিয়ে দেবে। আধিপত্য নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় তৈরি হবে। চলে আসবে নিয়ন্ত্রণকারীদের হাত।

Source:- http://www.prothomalo.com/technology/article/1492696/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%8B%E0%A6%97%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%89%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%97%E0%A7%87-%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%96%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A7%9C%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%9A%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%9B%E0%A7%87