অফিসে হাসিখুশি থাকতে
বৃহস্পতিবার বিকেল এলেই মনটা ভালো হয়ে যায়। কারণ, আগামীকাল শুক্রবার। খুশি অবশ্য বেশিক্ষণ থাকে না। দপ্তর খোলার আগের দিনই মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। কর্মজীবী হিসেবে আপনি সুখী না হলে কাজটাও সঠিকভাবে করা হয় না। কিছু নিয়ম মেনে চললেই নাখোশ কর্মজীবী পদবিটা সরিয়ে ফেলতে পারবেন অনায়াসেই। ফিরে আসবে কাজের প্রতি মনোযোগ ও স্বতঃস্ফূর্ততা।
কর্ম ও কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ পছন্দ না হলে চাকরি বদলানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেকেই। এতে করে নাকি কাজের প্রতি আনন্দ ফিরে আসে। পছন্দের কর্মক্ষেত্রেও কিন্তু একই মনোভাব কাজ করতে পারে। কর্মক্ষেত্রে আনন্দময় ও ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করতে 'ফিশ ফিলোসফি'–র চারটি ধারণাই যথেষ্ট বলে মনে করেন করপোরেট কোচের প্রধান পরামর্শক যিশু তরফদার। তিনি বলেন, 'কর্মজীবনে খুশি থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ফিশ ফিলোসফি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনুসরণ করা হয়। খেলা, অন্য মানুষকে আনন্দ দেওয়া, অন্যদের কাজে সহায়তা করা, মনোভঙ্গি নির্বাচন—এই চারটি অনুসরণ করলে কর্মজীবনের কাজগুলো আনন্দের সঙ্গে করতে পারবেন।'
অনিচ্ছাকৃতভাবে কাজে যাওয়া, কাজগুলো অসমাপ্তভাবে করা, সবশেষে কাজের প্রশংসা না পাওয়া—সবকিছুই একটি অপরটির সঙ্গে জড়িত। কর্মক্ষেত্রের এই নেতিবাচক চাপগুলো একসময় ব্যক্তিগত জীবনেও পড়ে। সারাক্ষণ মুখ গোমড়া করে থাকলে বিরক্ত হয়ে যান কর্মকর্তা ও সহকর্মীরা। নিজেকে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য কর্ম ও কর্মক্ষেত্রের প্রতি সম্মান দেখানো আবশ্যক।
(https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/0x482x1/uploads/media/2015/08/19/0fab89465d09dcb3f72992c7d39942d6-6.jpg)
কর্মক্ষেত্রটি আনন্দময় করে তোলার জন্য যিশু তরফদারের কিছু পরামর্শ—
খেলা: ফিশ ফিলোসফির ধারণা এটি। কাজকে কঠিনভাবে নেওয়া যাবে না। খেলা যেমন আনন্দ দেয়। তেমনি কাজটাকেও আনন্দের সঙ্গে নিতে হবে।
অন্যদের আনন্দ দেওয়া: কোনো না কোনো পরিস্থিতির মধ্যে প্রতিদিন অফিসে যেতে হয়। যদি মনে করেন পাশের সহকর্মীর মন ভালো নেই। চেষ্টা করুন তাঁর মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে দিতে। যাতে সে সুন্দরভাবে কাজটি করতে পারে। দেখবেন আপনারও ভালো লাগছে।
অন্যদের সাহায্য করা: এটিও ফিশ ফিলোসফির ধারণা। আমি এখানে আছি—এই অনুভবটি আপনার সহকর্মীকে দিন। তাঁর কোনো কিছু দরকার হলে সহায়তা করুন।
মনোভঙ্গি বেছে নিন: অন্য কোনো কিছু না থাকুক নিজস্ব মনোভঙ্গি কী হবে, সেটা বেছে নেওয়ার নিয়ন্ত্রণটা আমাদের হাতেই থাকে। মনোভঙ্গিকে নির্বাচন করতে হবে সুন্দর মতো। মেজাজ খারাপ থাকলেও সেটাকে ভালো করার চেষ্টা করুন।
ব্যক্তিগত জীবনকে কর্মক্ষেত্রের বাইরে রেখে আসুন। বাড়ি অথবা পারিবারিক ঝামেলাগুলো যাতে অহরহ কর্মক্ষেত্র থেকে সামলাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
নিজের কাজ করার জায়গাটিকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখুন। কর্মক্ষেত্র থেকে পাওয়া অনুমতির পরিপ্রেক্ষিতে কাজের সময় আপনাকে কিছুটা আরাম দেবে এমন জিনিস রাখতে পারেন।
কর্মক্ষেত্রের নেতিবাচক দিকগুলো নিয়েই শুধু চিন্তা করবেন না। বরং যত ছোট জিনিসই হোক না কেন ইতিবাচক মনোভাব দেবে এমন জিনিসগুলো শনাক্ত করুন। সেটা কোনো নিয়মও হতে পারে, আবার আপনার সহকর্মীও হতে পারে।
মন খারাপ থাকলেও হাসুন। কোনো কিছু নিয়ে মন খারাপ থাকলে কাছের সহকর্মীর সঙ্গে তথ্যটি ভাগ করে নিন। কিছুটা হলেও ভালো বোধ করবেন।
আপনার প্রাপ্য ছুটির দিনগুলো সুযোগমতো ব্যবহার করুন। ঘুরে আসুন। দেখবেন কাজের প্রতি মনোযোগ বেড়ে গেছে বহু গুণ।
সূত্র: দ্য মিউস, মনস্টার ডটকম
Source: The Daily Prothom Alo