নিজের বেতন বাড়াবেন কীভাবে
চাকরির সাক্ষাৎকারে অনেকেই নিজের পারিশ্রমিকের অত্যধিক প্রত্যাশা করেন। এতে নিয়োগকর্তা ও চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। কীভাবে নিজেকে তৈরি করবেন 'পারিশ্রমিক প্রত্যাশার' প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য? নিচে বিশ্লেষণের মাধ্যমে সমস্যাগুলো বের করার চেষ্টা করেছেন ফোর্বস ম্যাগাজিনের ক্যারিয়ার-বিষয়ক লেখক সুজান অ্যাডামস।
(https://www.personneltoday.com/wp-content/uploads/sites/8/2018/03/pay-rise.jpg)
উচ্চ পারিশ্রমিকের প্রত্যাশার ক্ষেত্রে স্বল্পভাষীর পরিচয় ঝেড়ে ফেলুননিজের মধ্যে যদি সংকোচ, ভয় কিংবা লাজুক ভাব থাকে, সে ক্ষেত্রে অনেকে নিজের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। পারিশ্রমিকের আলোচনার ক্ষেত্রে যা হতে পারে বড় বাধা। নিজের দুর্বলতাগুলো মুছে ফেলার চেষ্টা করুন ও নিজেকে অন্তর্মুখী না করে বহির্মুখী করুন।
আস্থা বাড়ান
নিজের প্রতি আস্থা বাড়ান। অবশ্যই নিজের যোগ্যতাকে মাথায় রেখে পারিশ্রমিকের আলোচনা করুন। উল্লেখ্য, একজন মাধ্যমিক পাস করা চাকরিপ্রার্থী একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পারিশ্রমিক আশা করা আকাশকুসুম চিন্তা ছাড়া কিছুই নয়।
চাকরির বাজার সম্পর্কে সাধারণ ধারণা রাখুন
এই সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে সব সময় নিজেকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। শরণাপন্ন হতে পারেন কোনো ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞের কাছে। আপনার যোগ্যতা ও দক্ষতার সন্নিবেশে তিনি আপনার প্রত্যাশার প্রতিফলিত রূপ দান করবেন। এ ছাড়া অনেক সময় ক্যারিয়ার-বিষয়ক আলোচনা সভা আয়োজন করে অনেক প্রতিষ্ঠান। এতে যেমন আপনার চাকরির বাজারের ধারণা হবে, তেমনি পেশাদারি মনোভাবের সৃষ্টি হবে।
নিজ লক্ষ্যে দৃঢ় থাকুন
আপনার নিজের আকুতি না থাকলে কর্মক্ষেত্রের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কখনোই আপনার পদোন্নতি কিংবা পারিশ্রমিক বাড়ানোর কথা চিন্তা করবেন না। আপনার মন কী চাইছে, তা কর্মকর্তার জ্ঞাতব্য না-ও থাকতে পারে। হয়তো জবাবে 'না' হতে পারে অথবা 'হ্যাঁ'। এ ক্ষেত্রে যদি আপনার নিয়োগকর্তার উত্তর 'হ্যাঁ' হয়, তাহলে তো আপনি সফল। যদি তিনি পারিশ্রমিকের ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানান, তাহলে আপনার ব্যক্তিত্ব ও দক্ষতা দিয়ে মন জয় করতে পারেন কর্মকর্তার। আবার অন্য কর্মক্ষেত্রের সন্ধানও করতে পারেন। নিজের লক্ষ্যে দৃঢ় থাকাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বর্তমানে অনেক নতুন কর্মক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়েছে। যদি আপনি যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার যাচাইয়ে এগিয়ে থাকেন, তাহলে অন্য কর্মক্ষেত্রে নিজেকে সহজেই প্রমাণ করতে পারবেন।
কথা বলার সাহস করুন
কর্মক্ষেত্রে নিজেকে যদি আত্মবিশ্বাসী হিসেবে পরিচয় দিতে না পারেন, সেখানে আপনাকে পদদলিত হতে হবে। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে বলার সাহস করুন যে আপনি যোগ্য লোক, কিন্তু আপনার সঠিক মূল্যায়ন হচ্ছে না। একটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, অবশ্যই যোগ্যতা প্রমাণ করার পর আপনি কর্মকর্তাকে প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করতে পারেন। অনেকে ঘাবড়ে যান যখন প্রত্যাশার কথা বলার প্রয়াস করেন। তাই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চর্চা করুন কথা বলার।
'না' শোনার অভ্যাস থাকা চাই
পেশার ক্ষেত্রে 'না' শব্দটি অনেকবার শুনতে হতে পারে। আর পারিশ্রমিক বৃদ্ধির প্রত্যাশায় এটা সবচেয়ে ব্যবহৃত শব্দ। সে ক্ষেত্রে ধৈর্যের পরিচয় যাঁরা দেবেন, তাঁদের সফলতার হার একটু বেশি। অনেকে 'না' শব্দের ফলে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কর্মক্ষেত্রে নিজের যোগ্যতাকে সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করুন। অনেক সময় দেখা যায়, আপনার পরিশ্রমের সফলতা আপনার ওপরের কর্মকর্তা নিচ্ছেন। তাতে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে বাহবা পাচ্ছেন। চেষ্টা করুন, আপনার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে আপনার কাজের সম্পর্কে জ্ঞাত রাখতে। সেখানে আপনার মূল্যায়ন যেমন হবে, তেমনি পারিশ্রমিক প্রশ্নের উত্তরে প্রভাব পড়বে।
অনুবাদ: শাকিল চৌধুরী
Source: The Daily Prthom Alo