News:

Skill.jobs Forum is an open platform (a board of discussions) where all sorts of knowledge-based news, topics, articles on Career, Job Industry, employment and Entrepreneurship skills enhancement related issues for all groups of individual/people such as learners, students, jobseekers, employers, recruiters, self-employed professionals and for business-forum/professional-associations.  It intents of empowering people with SKILLS for creating opportunities, which ultimately pursue the motto of Skill.jobs 'Be Skilled, Get Hired'

Acceptable and Appropriate topics would be posted by the Moderator of Skill.jobs Forum.

Main Menu

Why young people change their jobs repeatedly?

Started by mim, May 12, 2019, 12:41:11 PM

Previous topic - Next topic

mim

বারবার চাকরি কেন বদল করে তরুণেরা?

চলতি মাসে হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউতে প্রকাশিত 'কেন মানুষ চাকরি ছাড়ে' শিরোনামে একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে। গবেষক পল গারল্যান্ড সেই লেখায় লিখেছেন, '২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের মধ্যে কর্মক্ষেত্র বদলানোর প্রবণতা থাকে সবচেয়ে বেশি। প্রায় ৭০ শতাংশ তরুণ পেশাজীবীই এই বয়সে চাকরি করার সময়ই অন্য কোথাও 'ভালো' চাকরির খোঁজ করে। এ কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগের হর্তাকর্তারা দক্ষ কর্মীদের আটকে রাখার নানা পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। মোটা অঙ্কের বেতন, দারুণ সুযোগ-সুবিধা, নিরাপদ ভবিষ্যতের নিরাপত্তা থাকার নিশ্চয়তা দেওয়ার পরেও পেশাজীবীরা চাকরিতে নিয়োগের তিন বছরের মধ্যেই নতুন পথ খুঁজতে শুরু করেন।
কর্মক্ষেত্র বদলে একদিকে যেমন পেশাজীবনে সামনের দিকে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়, তেমন অনেক বিপত্তিও বাধে। কর্মস্থলকে একটা পাইপলাইনের মতো দেখার চেষ্টা করুন। আপনি পড়াশোনা শেষে যখন একবার চাকরিতে প্রবেশ করেন তখন আসলে সেই পাইপলাইনে পা রাখলেন আপনি। তারপরে ধীরে ধীরে সময়ের সঙ্গে পদোন্নতি পেয়ে পেয়ে পাইপলাইনের সামনে এগিয়ে যাবেন। এর মধ্যে কর্মস্থল পরিবর্তন মানে হচ্ছে আপনি পা সারিয়ে অন্য পাইপে পা রাখছেন। ঘন ঘন কর্মস্থল পরিবর্তনে পেশাজীবনের বারবার দিক বদলাতে থাকে—এতে ঝুঁকিও যেমন আছে, তেমনিও উপকারও আছে।


ঘন ঘন চাকরি বদলের ভুল

কোনো কারণ ছাড়া হুটহাট আমরা চাকরি বদলের সিদ্ধান্ত নেন অনেকে। নিজের ক্যারিয়ারকে সামনে নিয়ে যাওয়ার জন্য কর্মস্থল পরিবর্তন করার সময় ভেবে সিদ্ধান্ত নিন। হুটহাট কর্মস্থল বদলালে আপনাকে নিয়ে আপনার পেশার দুনিয়ায় নেতিবাচক কথা ছড়িয়ে পড়তে পারে। আশপাশের মানুষের সঙ্গে আপনার হুটহাট সিদ্ধান্ত পরিবর্তন নিয়ে কলহ বাধতে পারে। আপনার দায়-দায়িত্ববোধ, কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সুযোগ থাকে। তাড়াহুড়ো না করে সময় নিয়ে চাকরি পরিবর্তনের যোগ-বিয়োগ অঙ্ক কষে তারপর সিদ্ধান্ত নিন। শুধু বেতন বেশি নয়, ভবিষ্যতের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভ্যাস করুন। আপনার যারা শুভাকাঙ্ক্ষী, বয়সে বড়, তাদের সঙ্গে বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে পারেন।

যে কারণে চাকরি বদলের সিদ্ধান্ত

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, ২১ থেকে ২৮ বছরের তরুণ পেশাজীবীদের কাছ থেকে অফিসের অনেক বেশি প্রত্যাশা থাকে। যে কারণে কর্মস্থলে এই বয়সের মানুষের কাজের ব্যাপ্তিও থাকে বেশি। আবার ২৮ থেকে ৩৮ বছরের পেশাজীবীদের কাছ থেকে অফিস অনেক বেশি কাজ পাওয়ার প্রত্যাশা করে। দায়িত্ববোধ যেন ঠিকমতো থাকে তাও চায়। এসব প্রত্যাশার কারণে স্বাভাবিকভাবেই অফিস থেকে চাপ দেওয়া হয়। এই চাপের কারণে অনেকেই নতুন কর্মস্থল খোঁজা শুরু করেন। আবার, 'রাগী বস' এমন শব্দ যাঁদের অফিসে শোনা যায়, সেখানে বেশির ভাগ কর্মীই হুটহাট চাকরি বদলের সিদ্ধান্ত নেন বেশি।

অনেক সময় আমরা সামাজিক চাপেও চাকরি বদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 'তোর বন্ধু ভালো চাকরি করে'—এমন সব বাক্য হরহামেশাই আমাদের পরিবার, সহকর্মী, বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে শুনি। যাঁরা চাপ নিতে পারেন না, তাঁরাই তখনই হুট করে চাকরি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন।

চাকরি বদলের সময় যেসব ভুল করবেন না

ভুল ১: চাকরির বাজার সম্পর্কে ধারণা না রাখা

চাকরি বদলের আগে চাকরির সাম্প্রতিক বাজার সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নিন। আপনার দক্ষতা আর প্রত্যাশার প্রাপ্তিকে এক বিন্দুতে এনে চাকরির বাজার নিয়ে ছোটখাটো গবেষণা করে নিতে পারেন। আর যদি বর্তমান চাকরি ছেড়ে নতুন কোনো পেশায় পা রাখার চেষ্টা করেন, তাহলে সেই চাকরির আগামী ৫ থেকে ১০ বছর নিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা ও অর্থনীতি-বিষয়ক জার্নালে একটু চোখ দিতে পারেন। না জেনে নতুন পথে পা বাড়ানোর ঝুঁকি অনেক। জেনে-শুনে ঝুঁকি নিন, দ্রুত নতুন পথের দেখা পাবেন।

ভুল ২: বেতন বেশি

শুধু টাকা বেশি পাবেন বলে চাকরি পরিবর্তনের সেকেলের ধারণা বাদ দিন। অর্থের চেয়ে পেশাজীবন বড়। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক বরিস গ্রোসবার্গের মতে, মানুষ তার কর্মজীবনে গড়ে আট থেকে নয়বার বেতন বাড়িয়ে কর্মস্থল পরিবর্তন করতে পারে। যাঁরা খুব বেশি কর্মস্থল পরিবর্তন করেন, তাঁরা একসময় কর্মজীবনে আটকে যান।

ভুল ৩: কোথায় যাবেন তা-ই জানেন না

তরুণেরা অনেক সময় হুজুগেই চাকরি বদলের সিদ্ধান্ত নেন। অফিসের কাজের চাপ, বসের বকুনি কিংবা সকালে ঘুম থেকে দেরি করে ওঠার অভ্যাসের কারণে চাকরি বদলের সিদ্ধান্ত নেন। আবার কেউ কেউ পদবি বদলের জন্যও চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। এসব ক্ষেত্রে আসলে আপনি কোথায় যেতে চান তা নিয়ে নিজেকে প্রশ্ন করুন। এখন ছোট পদে আছেন, বড় পদে যেতে চাকরি বদলাবেন নাকি আরেক অফিসে গিয়ে আবারও ছোট পদে বেশি বেতনে যোগ দেবেন তার কারণ খুঁজে বের করুন।

ভুল ৪: 'আমি সেরা' এটা ভাবা

কর্মস্থল হচ্ছে প্রতিযোগিতার দুনিয়া। এখানে প্রতি মুহূর্তে নিজের কাজ দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করে যেতে হয়। নিজের সঙ্গে আর নিজের সহকর্মীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা নিত্যদিনের বিষয়। অফিসে অনেক সময় আমাদের মধ্যে 'আমি সেরা', 'আমাকে ছাড়া অফিস চলবে না' এমন আত্ম-অহংকার জন্ম নেয়। এই ধরনের আচরণ আপনাকে সাময়িক সুখ দেবে, সত্যিকার অর্থে এ ধরনের মনোভাব নিজের জন্য অনেক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় ভবিষ্যতে।

যে কারণে চাকরি বদলাবেন

আপনি যদি দেখেন আপনার অফিসে আপনার কাজের মূল্যায়ন অনেক দিন করা হয় না। আপনার কাজের দক্ষতার জন্য যোগ্যতা অনুসারে পদোন্নতি কিংবা বেতন-বোনাসও পাচ্ছেন না তাহলে নতুন অফিস খোঁজার চেষ্টা করতে পারেন। নতুন চাকরি খোঁজার আগে আপনার ঊর্ধ্বতন কর্তাদের কাছে আপনার কথাগুলো বুঝিয়ে বলতে পারেন। বেতন-বোনাস, সুযোগ-সুবিধা তো কর্মী হিসেবে আপনার অধিকার। এ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিন। অনেক সময় বস নতুন অফিসে যোগ দেন, আমরা সবাই মিলে সেই অফিসে যোগ দিই। এমন পরিস্থিতিতে হুজুগে সিদ্ধান্ত নেবেন না। চাকরি বদলের খুবই সাধারণ একটা কারণ হচ্ছে রাগ। রেগে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ভালো করেছে এমন মানুষের সংখ্যা কিন্তু খুবই কম, তাই রাগ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক না।

চাকরি বদলালেও যা বদলাবেন না

আমরা নতুন কর্মস্থলে নতুন করে সব শুরু করতে চাই। পুরোনো অফিসের সব ভুলে যেতে চাই—এতে আসলে অনেক সময় হিতে বিপরীত হয়। কর্মস্থল বদলানোর সময় পুরোনো অফিসের সহকর্মীদের সঙ্গে বিদায় সম্ভাষণ জানানোর ভদ্রতা আমরা ভুলে যাই। কর্মক্ষেত্রে এ ধরনের অভ্যাস নিজেকে নেতিবাচকভাবে প্রকাশ করে। আগের অফিসের সহকর্মীদের সঙ্গে রাগ-অভিমান থাকলে তা বিদায়ের দিনে কাটিয়ে আসুন। মনে রাখবেন 'যার যত বড় নেটওয়ার্ক, সে কর্মস্থলে অনেক ভালো করে', পুরোনো সহকর্মীদের সঙ্গে নিজের শক্তি বাড়ানোর জন্যই ভালো ব্যবহার করবেন। পুরান অফিসের কোনো গোপন তথ্য কিংবা স্পর্শকাতর কোনো তথ্য প্রকাশে সতর্কতা বজায় রাখুন। আগের অফিস আর পুরোনো সহকর্মীদের নিয়ে কর্মস্থলে বেশি গুণগান কিংবা সমালোচনা না করাই ভালো, এতে আসলে আপনাকে নিয়ে অনেকেই নেতিবাচকভাবে ভাবার সুযোগ পাবেন।

সাইফ নোমান খান : সহকারী অধ্যাপক, ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

Source: The Daily Prothom Alo