News:

Skill.jobs Forum is an open platform (a board of discussions) where all sorts of knowledge-based news, topics, articles on Career, Job Industry, employment and Entrepreneurship skills enhancement related issues for all groups of individual/people such as learners, students, jobseekers, employers, recruiters, self-employed professionals and for business-forum/professional-associations.  It intents of empowering people with SKILLS for creating opportunities, which ultimately pursue the motto of Skill.jobs 'Be Skilled, Get Hired'

Acceptable and Appropriate topics would be posted by the Moderator of Skill.jobs Forum.

Main Menu

The Planning of Admission Exam

Started by Md. Anikuzzaman, June 10, 2018, 12:25:49 PM

Previous topic - Next topic

Md. Anikuzzaman

শেষ হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পালা। ভর্তির সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে আরও একটা শব্দ—যুদ্ধ! ঢাল-তলোয়ারের ঝনঝনানি নেই ঠিক। কিন্তু সারা দেশের লাখো শিক্ষার্থীকে যে কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হয়, তাতে যুদ্ধ শব্দটা বোধ হয় বাড়াবাড়ি নয়। প্রত্যাশার চাপ, সময় ও নিজের আগ্রহের সঙ্গে সমন্বয় রেখে একটা লক্ষ্য নির্ধারণ, পরীক্ষার প্রস্তুতি—সব মিলিয়ে কাজটা সহজ নয়। এই কঠিন চ্যালেঞ্জ যে উপভোগ করবে, জয়ী তো সে-ই। সময় আছে প্রায় তিন মাস। কীভাবে এ সময়টা কাজে লাগানো যায়, পরীক্ষার্থীদের জন্য সেই পরামর্শ দিয়েছেন টেন মিনিট স্কুলের দুই শিক্ষক আয়মান সাদিক ও শামীর মোন্তাজিদ

ঠিক করো তোমার লক্ষ‍্য

আমাদের দেশে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা সাধারণত মেডিকেল কলেজ বা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়। কিন্তু বাস্তবে অধিকাংশের ঠিকানা হয় বিবিএ, আইন, সামাজিক বিজ্ঞান, অর্থনীতি, সাহিত্য, ইতিহাস, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মতো আকর্ষণীয় বিষয়গুলোতে। তাই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। সামাজিক বা পারিবারিক চাপের কাছে হার না মেনে বরং প্রথমেই ঠিক করে ফেলো তোমার পছন্দের বিষয়টি। তারপর খুঁজে দেখো, বাংলাদেশের কোন কোন বিশ্ববিদ‍্যালয়ে সে বিষয়টি পড়ার সুযোগ রয়েছে। তাহলেই তৈরি হয়ে যাবে তোমার স্বপ্নের তালিকা। এ ক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন, পাশের বাসার আন্টির কথা শুনে নিজের জীবনের লক্ষ‍্য নির্ধারণ করা হয়তো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। বিশ্বাস রাখো নিজের পছন্দে।

অতঃপর প্রস্তুতি...

ভর্তিযুদ্ধের শুরুতেই অধিকাংশের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। অনেক পরীক্ষার্থীকেই দেখা যায় প্রথম অধ‍্যায়টা খুব মন দিয়ে পড়ছে; কিন্তু শেষের দিকের অংশটুকু রয়ে গেছে একেবারেই অধরা। তাই কলেজজীবনে যে অধ‍্যায়গুলো ভালো করে পড়া হয়নি, এখন সেই অংশতেই দিতে হবে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ। তোমার সময় খুব সীমিত। একই জিনিস বারবার পড়ার সুযোগ হয়তো হবে না। এখন কোনো অংশ বাদ পড়ে গেলে তা লাল কলমে চিহ্নিত করে রাখো। পরীক্ষার আগের দিনগুলোতে সেগুলো গুরুত্বসহকারে পড়তে পারবে। ভর্তি পরীক্ষার জন‍্য তোমার বোর্ডের পাঠ‍্যবইগুলো হবে সবচেয়ে বড় সহায়ক। এ ক্ষেত্রে যেকোনো লেখকের বই পড়লেই মূল তথ‍্যগুলো তোমরা পেয়ে যাবে। বাজারের সহস্র গাইডের বোঝায় নিজের কাঁধ ব্যথা না করাটাই শ্রেয়।

দৌড়াতে হবে সময়ের বিপরীতে

বাংলাদেশের অধিকাংশ ভর্তি পরীক্ষাই হয় বহুনির্বাচনি প্রশ্নের আলোকে। সে ক্ষেত্রে প্রতি প্রশ্ন-উত্তরের জন‍্য সময় থাকে এক মিনিটেরও কম। তাই দুষ্ট ঘড়িটাকে বশে আনা শিখতে হবে। ভর্তি পরীক্ষার জন‍্য প্রস্তুতির একটা বড় অংশ হলো বিগত বছরের প্রশ্ন অনুশীলন করা। আগের প্রশ্নগুলোতে বারবার চোখ বোলালেই তোমার একটা মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে যাবে। প্রশ্নগুলো পেতে যদি গাইডবই কিনতে না চাও, চাইলে ঢুঁ মারতে পারো টেন মিনিট স্কুলের সাইটে (www.10minuteschool.com)। সেখানে বিনা মূল্যে পেয়ে যাবে বেশ কিছু বিশ্ববিদ‍্যালয়ের বিগত বছরের প্রশ্ন। একটা অ্যাকাউন্ট খুলে নিয়ে একের পর এক পরীক্ষা দিতে পারো। প্রতিটি কুইজের শেষে তোমার কতটুকু সময় লাগল এবং কত নম্বর তুমি পেলে, সেটা জানিয়ে দেওয়া হবে। সঙ্গে থাকবে ভুল হয়ে যাওয়া প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর। বারবার পরীক্ষা দিলে দেখবে তোমার প্রাপ্ত নম্বরটা দিন দিন বাড়ছে। আর ব‍্যয়িত সময়টা যাচ্ছে কমে। এতে তোমার মনে জমা হবে প্রবল আত্মবিশ্বাস—'আমিও পারব'। এই বিশ্বাসটাই ভর্তিযুদ্ধের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।

মচকাব, কিন্তু ভাঙব না

জীবনের অন্যান্য অংশের মতো ভর্তি পরীক্ষাতেও থাকবে জয়-পরাজয়। তুমি সর্বাত্মক চেষ্টা করে পরীক্ষা দিয়েও ব্যর্থ হতে পারো। কিন্তু মনে রাখবে, পরাজয়ের ধাক্কা কাটিয়ে উঠে পুনরায় চেষ্টা করার মধ্যেই সফলতার মূলমন্ত্র নিহিত। কোনো কারণে নিজের প্রথম পছন্দের বিশ্ববিদ‍্যালয়ে চান্স না পেলে সময় নষ্ট না করেই দ্বিতীয় পছন্দকে পাওয়ার জন‍্য লেগে পড়তে হবে। হাল ছেড়ে দেওয়া চলবে না। অনেকেই অন্য বন্ধুদের ভালো প্রস্তুতি এবং সাফল‍্য দেখে হতাশ হয়ে নিজের আত্মবিশ্বাসের বারোটা বাজিয়ে দেয়। তাই জেনে রেখো, বিফল হয়তো তুমি হবে। কিন্তু খোঁড়া পা নিয়েও যে যোদ্ধা লড়াই করতে জানে, বিজয়টা হয়তো তার জন‍্যই লেখা থাকবে।

স্বাস্থ‍্যই সকল সুখের মূল

অনেক ভালো ছাত্রকেই ভর্তি পরীক্ষার সময় ভয়ানক অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখেছি। ফলে তারা নিজের পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হতে পারে না। তাই সুস্থ থাকার জন‍্য আলাদা নজর দিতে হবে। এখন গ্রীষ্মকালে ভাইরাসজনিত অসুখ-বিসুখ ছড়িয়ে পড়বে, বিশেষ করে খাবার পানির ব‍্যাপারে সতর্ক থাকবে। দৈনিক আট ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম তোমার ভর্তিযুদ্ধের জন‍্য খুবই দরকার।

তথ‍্যই শক্তি

অনেক কষ্ট করে তুমি হয়তো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিতে গেলে। কিন্তু পরীক্ষার হলে ক‍্যালকুলেটর ব‍্যবহার, প্রশ্নের মানবণ্টন, উত্তরপত্রে সেটকোড লেখার মতো বিষয়গুলোতে ভুল করে তোমার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে যেতে পারে। তাই পরীক্ষা-প্রক্রিয়ার আদ্যোপান্ত তোমাদের জানতে হবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবণ্টন, সময়, নিয়মকানুন কিছুটা ভিন্ন। সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে সেই তথ‍্যগুলো এখনই সংগ্রহ করে রাখো। অতিপরিচিত বিশ্ববিদ‍্যালয়গুলোর তথ্য আমাদের টেন মিনিট স্কুলের সাইটেও ছবির মাধ্যমে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। সুতরাং, প্রযুক্তির এই যুগে ভর্তি-সংক্রান্ত তথ্যের ব‍্যাপারে নিজেকে সব সময় অবগত রাখবে।

সাজেশনের মায়াজাল

আমাদের বোর্ড পরীক্ষাগুলোতে শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের একটা সাজেশন পড়ে পাস করে যায়। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার সবচেয়ে বড় তফাত হলো, 'এই পরীক্ষার কোনো সাজেশন নেই'। সিলেবাসের সবই আসতে পারে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে। তাই পাঠ‍্যবইটি হাতে নিয়ে তার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোনো প‍্যারা বাদ না দিয়ে পড়ে যাও। কঠিন বিষয়গুলোকে পড়ার সময় তালিকা আকারে একটা সাদা কাগজে নোট করে রাখতে পারো। সাজেশন দেখে পড়ার সময় এখন শেষ।

নিজের পড়া, সেরা পড়া

আমাদের দেশে ভর্তি প্রস্তুতির প্রথম ধাপ হিসেবে আমরা নানা রকম বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার টাকা খরচ করে আসি। এই শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ মাস না ঘুরতেই হতাশ হয়ে বাসায় বসে থাকে। কারণ যানজট ঠেলে, গরমের মধ্যে রাস্তায় দৌড়াতে গিয়ে নিজের পড়ার সময়টুকু একেবারেই হয়ে ওঠে না। মনে রাখবে, তুমি নিজের পড়ার টেবিলে বসে যেই প্রস্তুতিটা নেবে, সেটাই সবচেয়ে বেশি কাজে দেবে। পড়াটা কেউ তোমাকে চামচ দিয়ে মুখে তুলে দিলে তা খুব বেশি কাজে আসবে না। কষ্ট করে একা একা পড়তে শেখো। বিশ্ববিদ‍্যালয়ে পড়ার অন্যতম একটা বৈশিষ্ট‍্য হলো জ্ঞানের দিক দিয়ে স্বাবলম্বী হতে শেখা। বাইরের দৌড় কমাও, ভালোবাসতে শেখো নিজের ঘরের টেবিলটাকে (যারা বিছানায় বা মাটিতে বসে পড়তে অভ্যস্ত, তাদের জন্যও একইভাবে একই কথা প্রযোজ্য)।

স্নায়ুর সঙ্গে বোঝাপড়া

মাত্র এক ঘণ্টার একটা পরীক্ষায় আমাদের জীবনের লক্ষ‍্য নির্ধারিত হয়ে যায়। সুতরাং স্নায়ুর চাপ বাড়াটা খুবই স্বাভাবিক। অনেক ভালো ছাত্রই পরীক্ষার হলে গিয়ে হার মানে এই স্নায়ুর কাছে। তাই নিজের স্নায়বিক বোঝাপড়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রস্তুতি। কথায় আছে, অনুশীলনই সৃষ্টি করে আত্মবিশ্বাস। পরীক্ষার অনুরূপ প্রশ্নপত্রে নিয়মিত বাসায় বসে পরীক্ষা দিতে থাকলে পরীক্ষার হল সম্পর্কে একটা ভালো ধারণা তৈরি হয়ে যায়। তখন ভয়টা অনেকাংশে কমে আসে। এ ছাড়া নিয়মিত মেডিটেশন এবং প্রার্থনার মাধ‍্যমেও নিজের স্নায়বিক নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব।

এই পরামর্শটা মা-বাবার জন্য

জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে একজন শিক্ষার্থীকে সবচেয়ে বড় মনোবল দিতে পারেন মা-বাবা। তাই সব শেষে অভিভাবকদের উদ্দেশ‍্য করে বলছি: আপনার সন্তানদের এ সময়ে সবচেয়ে বেশি দরকার মানসিক সাহায‍্য। আপনার সন্তান প্রকৌশলী হতে চাইলে তাকে জোর করে চিকিৎসক বানানো হয়তো ঠিক হবে না। তাদের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিলে তাদের প্রস্তুতি আরও বেগবান হবে। কারণ, নিজের নির্ধারিত লক্ষ‍্য অর্জনের জন‍্য মানুষ অনেক বেশি পরিশ্রম করে। দ্বিতীয়ত, কোনো একটা পরীক্ষায় খারাপ করলে দয়া করে তাদের দোষারোপ করবেন না; বরং সামনের পরীক্ষার জন‍্য প্রস্তুতি নিতে তাকে উৎসাহিত করুন। 'কেন কম নম্বর পেলে?' এই প্রশ্ন করে কারও নম্বর বাড়বে না; বরং আপনার ভালোবাসা আর সহযোগিতা পেলে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। বিজয়টা কিন্তু আসবে সেই আত্মবিশ্বাসের ছোঁয়াতেই। একটু লক্ষ রাখবেন, যেন আপনার সন্তান প্রতিদিন কিছুটা সময় হলেও একা একা পড়াশোনা করার সুযোগ পায়। সে যেন নিজেকে সময় দেয়। আগামী দুই-তিন মাস বাসাটা আপনার সন্তানের জন‍্য একটু ভেজালমুক্ত রাখুন। হয়তো মাঝেমধ্যে বাসায় ভালো রান্নাবান্না হলেও আপনার ছেলেটা বা মেয়েটা পড়াশোনায় উৎসাহ পাবে।

শেষ কথা

ভর্তি পরীক্ষা একটু প্রতিযোগিতামূলক, তবে এটা অসম্ভব কিছু নয়। নিয়মিত সামনের সময়টুকু কাজে লাগিয়ে প্রস্তুতি নিলে কোনো একটি ভালো প্রতিষ্ঠানে সুযোগ অবশ‍্যই পাওয়া যাবে। আবারও মনে করিয়ে দিই, কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হতে পারলেই কিন্তু সব শেষ হয়ে যাবে না। তোমার আশপাশেই এমন অনেক বড় ভাই বা বোনের দেখা পাবে, যাঁরা পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারেননি। কিন্তু যা পড়ছেন, যেখানে পড়ছেন, সেটাই উপভোগ করছেন। ভালো করছেন। জীবনের এই ক্রান্তিকালে তোমাদের প্রতি রইল অনেক অনেক ভালোবাসা। এগিয়ে যাও বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে...

Source: The Daily Prorhom Alo, 3rd June 2018